ট্রাফিক সার্জেন্ট বকশিকে হত্যা করা হয়েছে

37

নগরীর বন্দর রোডে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট বকশি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে (শাওন) হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। তাদের দাবি, কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভার পূর্ব আক্রোশ থেকে ইচ্ছা করেই তাকে ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলেছে। গতকাল শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে নিহত পুলিশ সার্জেন্টের বাড়িতে গেলে তারা এই প্রতিবেদকের কাছে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
শাওনের মায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ছোট ভাই মেহেদী হাসান বাঁধন বলেন, ‘এবার ভাই এসে মাকে বলেছেন, মা আমি যে জায়গায় চাকরি করছি (চট্টগ্রামের বন্দর রোড) সেই জায়গাটা ভালো না। খুব তাড়াতাড়ি অন্যত্র বদলি নেবো।’
বাঁধন বলেন, ‘ভাই বদলি নিয়েছেন, কিন্তু সেটা চিরতরের বদলি! ভাই আর ফিরবেন না। সবাই ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।’ জানতে চাইলে মেহেদী হাসান বাঁধন বলেন, ‘এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। আমার ভাই গাড়ি চালকের আক্রোশের শিকার, এটা হত্যাকান্ড। একজন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে এভাবে মেরে ফেলা মেনে নেওয়া যায় না। আমার ভাই যে এলাকায় দায়িত্ব পালন করতেন, সেই রোডে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির গাড়ি চলতো। বিভিন্ন সময় ভাই ওইসব গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন। এমন নানা কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ভাইকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়েছে।’
বাঁধন জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ছুটি কাটিয়ে ১৩ অক্টোবর কর্মস্থলের উদ্দেশে চট্টগ্রাম গেছেন শাওন। ছুটিতে এসে বড়িতে অনেক আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াতও খাইয়েছেন তিনি। যাওয়ার আগে স্থানীয় মসজিদ ও কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য দানও করেছেন।
প্রসঙ্গত, নিহত পুলিশ সার্জেন্ট বকশি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর (শাওন) বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম পোড়ামানিকটারী গ্রামে। তার বাবার নাম বকশি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও মায়ের নাম মর্জিনা বেগম। স্ত্রীর নাম মিথিলা।
গতকাল শুক্রবার সকালে নিহত পুলিশ সার্জেন্ট বকশি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শাওনের লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন তার পরিবারের সদস্যসহ স্বজন ও এলাকাবাসী। ছেলের শোকে আর্তনাদ করছেন শাওনের মা মর্জিনা বেগম। দুপুর ১টার দিকে বকশি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে (শাওন) বহনকারী লাশবাহী গাড়ি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দুপুর তিনটায় জানাজা শেষে কালাম উদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে সার্জেন্ট বকশি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে (শাওন) দাফন করা হয়।
শাওনের মৃতদেহ নিয়ে আসা তারই সহকর্মী পুলিশ সার্জেন্ট আলমগীর কবির জানান, ঘাতক কাভার্ডভ্যানের চালক পালিয়ে গেলেও কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।