ট্রলার ও জাহাজডুবির ঘটনায় ৫ জনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ৮

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীতে পৃথকভাবে ফিশিং ট্রলার ও লাইটারেজ জাহাজডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ১৩ জনের মধ্যে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৮ জনকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস। কর্ণফুলী নদী থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনটি, দুপুরে একটি এবং আগের রাতে আরও একটি লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কোস্টগার্ডের পূর্ব জোনের জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আল আমিন বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে, সোয়া ১১টায় এবং ১১টা ৫০ মিনিটে তিনটি লাশ আমরা উদ্ধার করেছি। বিকেল তিনটার দিকে আরও একটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরেকটি লাশ গত (বুধবার) রাতে ভেসে ওঠার পর স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করেছেন। ট্রলার ও জাহাজডুবিতে মোট ১৩ জন নিখোঁজ ছিলেন। পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ৮ জন নিখোঁজ আছেন। আমাদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকার সি-রিসোর্স ঘাটসংলগ্ন বয়া এলাকায় র‌্যাঙ্কন কোম্পানির মালিকানাধীন ‘এমবি মাগফেরাত’ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এতে মোট ১৬ জন নাবিক ছিলেন। এর মধ্যে ৯ জন নিরাপদে তীরে উঠতে সক্ষম হন। নিখোঁজ ছিলেন ৭ জন।
নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ পূর্বদেশকে বলেন, উদ্ধার হওয়া পাঁচটি লাশের মধ্যে চারটির পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- ট্রলারের ক্যাপ্টেন ফারুক বিন আবদুল্লাহ, সেকেন্ড অফিসার জহিরুল ইসলাম, চিফ অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম এবং ডক সদস্য রহমত। আরেকটি লাশের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। লাশটি এখনও কোস্টগার্ডের হেফাজতে আছে।
ওই ট্রলারের নাবিকদের মধ্যে গ্রিজার প্রদীপ চৌধুরী, ফিস মাস্টার জহির উদ্দিন এবং অজ্ঞাত আরেকজন নিখোঁজ আছেন।
নগরীর আগ্রাবাদে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার গভীর রাতে কর্ণফুলী নদীর ব্রিজঘাট এলাকায় একজনের লাশ ভেসে আসে। সকালে নদীর পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অয়েলসংলগ্ন অংশে এবং ডাঙারচর এলাকার আরও তিনজনের লাশ পাওয়া যায়। দুপুরে ডাঙারচর এলাকায় আরেকজনের লাশ স্রোতের সাথে ভেসে আসে। কোস্টাগর্ড ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে লাশগুলো উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য, মাছ ধরার ট্রলারটি মেরামতের জন্য ডকে তোলার সময় প্রপেলার (পাখা) খুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশে থাকা বয়া এবং আরও কয়েকটি ফিশিং ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল।
এদিকে গত বুধবার বিকেলে নগরীর পতেঙ্গার কাটগড়ে চরপাড়া ঘাটের অদূরে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে বঙ্গোপসাগরে পাথরবোঝাই লাইটারেজ জাহাজ ‘এমভি সুলতান সানজানা’ ডুবে যায়। জাহাজটিতে মোট ৯ জন ছিলেন। কোস্টগার্ড তিন জনকে জীবিত উদ্ধার করে। ছয় জন এখনও নিখোঁজ আছেন।
কোস্টগার্ডের পূর্ব জোনের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আল আমিন বলেন, সকাল থেকে তল্লাশি অভিযান চললেও ওই জাহাজের নিখোঁজ কারও লাশ উদ্ধার হয়নি।