টোকেনে অটোরিকশা চালানোর মূলহোতা আলাউদ্দিনের তিন মাস কারাদন্ড

38

সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ হিসাবে দেখা হয় নগরে প্রবেশ করা জেলার সিএনজি অটোরিকশাকে। একটি সিন্ডিকেট টোকেনের মাধ্যমে এসব সিএনজি অটোরিকশাকে অবাধে শহরে চলাচলের সুযোগ করে দিচ্ছে। অবশেষে টোকেন সিন্ডিকেটের মূলহোতা আলাউদ্দিনকে গতকাল মুরাদপুর থেকে গ্রেপ্তারের পর তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ দিয়েছেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদপুর মোড়ে অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মনজুরুল হক। অভিযানে যানজট সৃষ্টিকারী ৯টি জেলার সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করা হয়। রোববার রাত ৮টার দিকেও একই স্থানে অভিযানে নামেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ১০টি সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করে বিআরটিএ অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর শুনানিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানতে পারেন দুটি টোকেনের বিনিময়ে জেলার এসব সিএনজি অটোরিকশা নগরে চলে। টোকেনের জন্য মাসে দেড় হাজার টাকা এবং প্রতিদিন ৬০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। ৬৫/৭০টি জেলার সিএনজিকে ঘিরে মাসে দুই-আড়াই লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য চলে। আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে এ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে নিশ্চিত হওয়ার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনজুরুল হক অনেক চেষ্টা করেও তাকে খোঁজ বের করতে পারেননি। এ অবস্থায় গতকাল বুধবার আটক সিএনজির চালক ও মালিকদের সমন্বয়ে একটি ফাঁদ তৈরি করেন তিনি। সেই ফাঁদে পা দেন আলাউদ্দিন। তাকে আটক করে তিনমাসের কারাদÐ দিয়ে জেলে পাঠান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
টোকেন বাণিজ্যের মূল হোতা মো. আলাউদ্দিন (৪৫) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের দক্ষিণ থানপুরের মৃত মুজিবুল হকের ছেলে।
কথা হলে বিআরটিএ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক বলেন, আমরা জেনেছি আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে টোকেনের মাধ্যমে জেলার সিএনজিগুলো শহরে চলে। আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি তাকে আটক করতে। লোকজন ভয়ে তাকে দেখিয়ে দিচ্ছিল না। অবশেষে একটা টোপের মধ্যে ফেলে তাকে আটক করা হয়। স্বীকারোক্তিতে সে দোষ স্বীকার করে। তাকে তিনমাসের বিনাশ্রম কারা্দন্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মনজুরুল হক বলেন, মুরাদপুরে গত বৃহস্পতিবার ও রোববার দুই দফা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। দুইদিনে ১৯টি সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে। তাদের কাছে দুটি টোকেন পাওয়া যায়। এসব টোকেনের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশাগুলো চলছিলো। দুটি টোকেনের জন্য মাসে ১৫০০ টাকা এবং দৈনিক লাইন চার্জ হিসাবে ৬০ টাকা করে দিতে হয় প্রতি সিএনজি অটোরিকশাকে। এ ধরনের ৬৫/৭০টি জেলার সিএনজি অটোরিকশা চলে বলে আমরা জেনেছি। এসবের মূল হতো এই আলাউদ্দিন।
এদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মনজুরুল হকের নেতৃত্বে গতকাল অলংকার মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ২৭টি মামলায় ৭৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে দুটি গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
অন্যদিকে আন্দরকিল্লা মোড়ে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর। এ সময় ১৬টি মামলায় ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ৫টি গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করে ডাম্পিংয়ে দেওয়া হয়।