টেকনাফে শিশু আলো হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদন্ড

12

কক্সবাজার প্রতিনিধি

টেকনাফের চাঞ্চল্যকর মো. আলী উল্লাহ আলো (৭) হত্যা মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল গতকাল বুধবার এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. সুমন আলী, ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান, মো. ইয়াকুব, মো. ইসহাক প্রকাশ কালু, নজরুল ইসলাম ও রোহিঙ্গা ছৈয়দুল আমিন প্রকাশ লম্বাইয়া। প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডও দেওয়া হয়েছে। রায়ে অপর দুই আসামি মুহিবুল্লাহ ও মো. দিদার মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদার বিল এলাকার ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও ফারজানা পারভীন সুইটির ৭ বছরের শিশুপুত্র মো. আলী উল্লাহ আলোকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র কর্মচারী মো. সুমন আলী মুক্তিপণ দাবির উদ্দেশ্যে অপহরণ করেন। পরে পাখির বাসা দেখানোর কথা বলে শিশু আলোকে ঘরের সিলিংয়ের উপর তুলে তার হাত পা বেঁধে মুখে কচটেপ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
ওই সময় আলো শোর চিৎকার করলে আসামি সুমন আলী ও অন্যরা ভয় পেয়ে যায়। আলো জীবিত থাকলে ঘটনা ফাঁস হতে পারে আশংকায় তারা আলোকে সিলিংয়ের উপর জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এ ঘটনায় মো. আলী উল্লাহ আলোর পিতা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৫ জন আসামির নাম উল্লেখ করে এবং ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও তাদেরকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। এরপর আলামত প্রদর্শন ও পর্যালোচনা, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট যাচাই, ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন যাচাই, তিন জন আসামির ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবন্দী যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি বুধবার রায়ের জন্য ধার্যদিন রাখা হয়। রায়ের জন্য ধার্য্য তারিখে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ঘটনার ১০ বছর ৮ মাস ৪ দিন পর বুধবার ১১ মে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির উপরোক্ত রায় প্রদান করেন।
আসামিদের মধ্যে মো. সুমন আলী, নজরুল ইসলাম, সৈয়দুল আমিন ও মহিবুল্লাহ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে। অন্য ৪ জন আসামি যথাক্রমে ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান, মো. ইয়াকুব, মো. ইসহাক প্রকাশ কালু ও মো. দিদার মিয়া রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।