টাস্কফোর্সের ১৬ সুপারিশ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে

14

বাজার ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ১৬ দফা সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ বিষয়ক টাস্কফোর্স। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রথম সভায় সোমবার এসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, ১৬ দফার কয়েকটি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে টাস্কফোর্স। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
টাস্কফোর্সের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে: ১। সমুদ্র ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং শুল্ক স্টেশনগুলো রমজানের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য খালাসে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।
২। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনে ফেরি পারাপারে বিআইডবিøউটিসি কর্তৃক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।
৩। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৪। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও মজুতদারদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়াতে হবে।
৫। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ কর্তৃক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৬। পাইকারি হতে খুচরা পর্যায়ে অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।
৭। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ-২০১১-এর ফরম ‘ঘ’ অনুসরণপূর্বক সরবরাহ আদেশ প্রদান এবং প্রকৃত ডিলার ছাড়া হাত বদল হওয়া পণ্য সরবরাহ না করার বিষয়ে মিলগুলোকে বাধ্য করতে হবে।
৮। ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে পাইকারি হতে খুচরা সকল পর্যায়ে পাকা রসিদ (প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানাসহ মুদ্রিত তথ্য) প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৯। ভোজ্যতেলের মিলগেট, পরিবেশক ও ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ, সঠিকভাবে প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
১০। মজুত ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত সকল আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে।
১১। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল কর্তৃক অপরিশোধিত তেল আমদানির পরিমাণ, পরিশোধনের পরিমাণ ও পরিবেশকদের নিকট সরবরাহের পরিমাণে সামঞ্জস্য রয়েছে কিনা সেটি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে পাঠাতে হবে।
১২। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ- ২০১১ এর অনুচ্ছেদ ৯(১), ৯(২), ৯(৩), ১২(১) ও ১২(৪) এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৮, ৪০ এবং ৪৫ যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
১৩। মিল কর্তৃক পরিবেশক নিয়োগ সংক্রান্ত হালনাগাদ তালিকা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে দিতে হবে।
১৪। ভোজ্যতেল রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় ঘটালে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৫। খুচরা পর্যায়ে মূল্যতালিকা প্রদর্শন এবং প্রতিটি ধাপে পাকা রশিদ সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
১৬। ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি রোধকল্পে মিলগুলোতে তদারকি জোরদার করতে হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ মার্চ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষকে সভাপতি করে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্যরা হলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, কৃষি সচিব, খাদ্য সচিব, শিল্প সচিব, তথ্য ও স¤প্রচার বিষয়ক সচিব, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, টিসিবির চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব।