টানেলে ভাগ্যবদল পিএবি সড়কের

152

বিশেষ প্রতিনিধি, আনোয়ারা

‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ কর্ণফুলী নদীর তলদেশ ভেদ করে দুটি টিউব স্থাপনের সফল সমাপ্তিতে ইতোমধ্যেই আলোর মুখ দেখেছে দেশের প্রথম এ সুড়ঙ্গপথটি। বাকী আছে উভয় পাশের সংযোগ সড়কের কাজ, যা শেষ হলেই স্বপ্নের এই পথে শুরু হয়ে যাবে যানবাহন চলাচল।
অতি দ্রæততার সাথে এগিয়ে চলেছে উভয় পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজও। কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা প্রান্তে প্রস্তুত হচ্ছে ৪০৭ কোটি টাকার বাজেটে সাড়ে দশ কিলোমিটার টানেল সংযোগ সড়ক। টানেলের আগেই ছয় লেনের এ সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে চায় সওজ। সড়কটি দৈর্ঘ্যে খুব বেশি না হলেও এটিই হবে বিশাল এক অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কের মিলনস্থল।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল টানেলের কাজ শেষ হওয়ায় এখন অপেক্ষা শুধু সংযোগ সড়কের, তাই আর বিলম্ব নয় বরং টার্গেট রাখা হয়েছে আগেভাগে টানেল সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করার।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, শিকলবাহা থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত ছয় লেনের এই সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই।
এ সড়কের চার লেন হবে দ্রুতগতি সম্পন্ন যানবাহন চলাচলের জন্য। আর বাকি দুই লেন হবে ধীরগতির যানবাহনের জন্য। প্রকল্প কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এপ্রিল মাসে হলেও সড়ক নির্মাণের কর্মযজ্ঞ আরও আগেই শুরু হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, সড়কের কাজে বেশি সময় লাগে মাটি ভরাট করতে। পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মাটি এর মধ্যেই ভরাট হয়ে গেছে। মোট সাড়ে দশ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ সড়কে ৮ দশমিক ২১ কিলোমিটার হবে ছয় লেনের। সওজের প্রধান প্রকৌশলী গত ৯ অক্টোবর সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করার নির্দেশনা প্রদান করে গেছেন। সংযোগ সড়কের জন্য টানেল নির্মাণ এবং উদ্বোধনের কাজ যাতে বিলম্বিত না হয় সে জন্য সড়ক বিভাগ পুরোপুরি সচেতন রয়েছে।
শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারার কালাবিবির দীঘি এবং সেখান থেকে আনোয়ারা সদর পর্যন্ত নির্মাণাধীন এ সড়কের মোট দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে এগারো কিলোমিটার। চাতরী চৌমুহনীর দক্ষিণে এ সড়কের সাথে মিলিত হবে টানেল সংযোগ সড়কটি। ফলে বিদ্যমান সড়ক সম্প্রসারিত হয়ে তা রূপ নিচ্ছে টানেল সংযোগ সড়কে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বার খুলে দেয়ার যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে স্বল্প দৈর্ঘের এই সড়কটি। কারণ, এর মাধ্যমেই সংযুক্ত হতে যাচ্ছে টানেল হয়ে একদিকে চট্টগ্রাম মহানগর এবং আরেকদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক।বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়কটি প্রস্থে হবে ১৬৫ ফুট। টানেল পরিপূর্ণভাবে চালু হলে তার মধ্যদিয়ে প্রথম বছরেই অন্তত ৬০ লাখ যানবাহন চলাচল করবে যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আর সকল যানবাহন যাবে দক্ষিণ প্রান্তের এই সংযোগ সড়ক দিয়েই।