টাকার মান আরও ৯০ পয়সা কমলো

18

পূর্বদেশ ডেস্ক

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ৯০ পয়সা কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে এখন প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। এর আগে সর্বশেষ সোমবার (৩০ মে) ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো হয় ১ টাকা ১০ পয়সা।
অবশ্য ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছে এখনও ৯২ থেকে ৯৩ টাকা নিচ্ছে। আর খোলাবাজারে এখন ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯৬-৯৭ টাকায়। বিদেশে হুন্ডিতেও ৯২-৯৩ টাকা দরে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে।
যদিও এ দিন ব্যাংকগুলোর জন্য বেঁধে দেওয়া হয় ডলারের একক রেট। তবে চার দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বাংলাদেশ ব্যাংক। গত রবিবার সব ব্যাংকে ডলারের এক রেট ৮৯ টাকা বেঁধে দেওয়ার পর প্রবাসী আয়ে ভাটা ও রফতানিকারকরা বিল নবায়ন না করার পর বৃহস্পতিবার (২ জুন) আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে তারা নিজেরাই ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলো বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে এবং চাহিদা বিবেচনায় ডলারের দাম ঠিক করবে। আজ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে’। টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য আজ ৯০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। এর ফলে রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বাড়বে।
টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে গত রবিবার দাম বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের রেট ছিল ৮৯ টাকা। আমদানি পর্যায়ে ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। আর প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর জন্য ডলারের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৮৯ টাকা ২০ পয়সা। কিন্তু এ দাম নির্ধারণের পর কমে যায় প্রবাসী আয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে বিশ্বজুড়ে চাহিদা বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশের মতো ডলারের বিপরীতে দর হারাচ্ছে টাকা।
মূলত, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে ডলারের ওপর বাড়ছে চাপ। এই চাপ সামাল দিতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্যদিকে ব্যাংকারদের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদেরও বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ ডলার সাশ্রয়ী করতে নানামুখী তৎপরতার পরও যখন কাজ হচ্ছে না তখন বাধ্য হয়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমাতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি ঠিক রাখতে গত মে মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দফায় টাকার মান কমাতে হয়েছে। এর তিন দিন পর ২ জুন আবারও টাকার মান কমানো হলো। প্রথম দফায় দর বাড়ানো হয়েছিল ৯ মে। সেদিন ডলারের বিনিময় মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এক বছর আগে অর্থাৎ গত বছরের জুনে প্রতি ডলার আন্তঃব্যাংকে বিক্রি হয়েছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা দরে।