টাইটানিকের সেই দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক, নির্মাতার ব্যাখ্যা

23

টাইটানিক সিনেমার সেই দৃশ্য মনে আছে? বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কায় আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া জাহাজের যাত্রীরা বরফজলে তলিয়ে যাচ্ছেন; ক্রমেই তাদের সামনে হিমশীতল মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে। প্রেমিক যুগল জ্যাক ও রোজ অতল জলে হাতে হাত রেখে বেঁচে থাকার শেষ লড়াই করছেন। এর মধ্যেই জ্যাক ও রোজের সামনে একটি ভাঙা কাঠের দরজা ভেসে আসে, সেই দরজায় প্রথমে রোজ ওঠেন, এরপর জ্যাককে তোলার চেষ্টা করলে দরজাটি ডুবে যেতে থাকে।
জীবন নাকি মৃত্যু? পেণ্ডুলামের মতো দুলতে থাকা জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রেমিকাকে বাঁচাতে মৃত্যুকেই বেছে নিলেন জ্যাক, আর হৃদয়ের সমস্ত উষ্ণতা দিয়ে জ্যাককে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে থাকেন রোজ। জ্যাকের হাত শক্ত বাঁধনে জড়িয়ে রেখে কাতরকণ্ঠে রোজ বলেন, ‘ওপরে আসো’। জ্যাক নিরুপায়। ততক্ষণে জ্যাকের হাত অবশ হতে থাকে; ধীরে ধীরে সাগরের গভীর নীলজলে তলিয়ে যান জ্যাক, জ্যাকের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকেন রোজ। এ সিনেমায় জ্যাক চরিত্রে লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও ও রোজ চরিত্রে কেট উইন্সলেট অভিনয় করে আলোচিত হয়েছেন। ১৯৯৭ সালে আজকের এই দিনে বিশ্বজুড়ে মুক্তি পায় নির্মাতা জেমস ক্যামেরন পরিচালিত টাইটানিক। ১৯৯৮ সালে সেরা সিনেমা, সেরা নির্মাতাসহ মোট ১১ বিভাগে অস্কার পেয়েছিল সিনেমাটি। টাইটানিক মুক্তির পর থেকে ২৫ বছর ধরে সেই কাঠের দরজার দৃশ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক চলছে। দর্শকেরা জ্যাকের মৃত্যু এখনো মেনে নিতে পারেননি। দর্শকেরা বলছেন, সেই দরজার ওপর জ্যাকও উঠতে পারতেন; রোজের সঙ্গে জ্যাকও বেঁচে যেতেন। কিন্তু জ্যাককে মেরে ফেলা হয়েছে। জ্যাককে না মারলেও তো হতো? দর্শকের এমন অনুযোগের জবাবও দিয়েছেন জেমস ক্যামেরন। তিনি বলেন, ‘জ্যাকের মৃত্যুর দৃশ্যটি চিত্রনাট্য লেখা নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনা নেই। তার মৃত্যুর দরকার ছিল। এটি রোমিও জুলিয়েট এর মতো সিনেমা; এতে ভালোবাসার সঙ্গে ত্যাগও রয়েছে। ত্যাগ দিয়েই ভালোবাসা পরিমাপ করা যায়।’