ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি মহাসড়ক

82

প্রবল বর্ষণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কসহ জেলার অধিকাংশ মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়ক। বৃষ্টির পানিতে এসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যান চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়াও সড়কের পাশের মাটি সরে যাওয়াসহ পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে শত শত যানবাহন। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথের তথ্য মতে, জেলার মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ ১২টি সড়কের অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৬৩ কিলোমিটারে অন্তত ১০টি পয়েন্টে ভয়াবহ ভূমিধস হয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ধস ও সড়কের ওপর পানি জমে থাকায় এ ঝুঁকি আরও বেড়েছে। বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে
চলাচল করছে যাত্রী ও পণ্যবাহী শত শত পরিবহন। শুধু খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক নয়, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও রামগড় সড়কসহ জেলার ১২টি মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়কের একই দশা। সঙ্কট সমাধানে দ্রæত সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ চান এসব সড়কে চলাচলকারীরা। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বাস চালক মো. ছগির মিয়া বলেন, পাহাড়ের খাদের সঙ্গে লাগানো সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। একটু অসর্তকতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার ওপর রাস্তার পাশের মাটি সরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রী নিয়ে এসব রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় ভয় করে।
কাভার্ডভ্যান চালক সেলিম উল্লাহ বলেন, বৃষ্টির সময় পাহাড়ের বাঁকগুলো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। এতদিন পাহাড়ধসের ঝুঁকি ছিল না। কিন্তু এখন পাহাড়ধসের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
থ্রি হুইলার চালক পঙ্কজ চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়ক দিয়ে আগে দুইটি গাড়ি এক সঙ্গে যেতে পারতো। এখন একটি গাড়ি যাওয়ার সময় অন্যটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া রাস্তায় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।
খাগড়াছড়ির প্রবীণ ঠিকাদার তাপস ত্রিপুরা বলেন, টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সড়কগুলো স্থায়ী ও পরিকল্পনা অনুসারে ঠিক না করলে সামনে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় আসতে পারে।
খাগড়াছড়ি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ভারী বর্ষণে কারণে খাগড়াছড়ির সবগুলো সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ যাতে একেবারে বন্ধ হয়ে না যায় সে লক্ষ্যে বালির বস্তা ও ত্রিপল দিয়ে রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর ভাঙন ঠেকানো হচ্ছে। বৃষ্টি শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলায় টেকসই ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে একটি প্রকল্প একনেকে পাসের অপেক্ষায় আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের দুইটি পয়েন্টে ভয়াবহ পাহাড়ধসে ২১ দিন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। প্রবল বর্ষণে ওই সময়ও খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও জালিয়াপাড়া-রামগড় ঢাকা মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।