ঝাঁকুনিতে কাঁপল দেশ ভাঙল ঘর

57

পূর্বদেশ ডেস্ক

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে এ কম্পন অনুভূত হয়। এ সময় প্রবল ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠে দেশ। দুলতে থাকে একের পর এক ভবন। হঠাৎ ভূমিকম্পে অনেকে ঘুম থেকে জেগে উঠেন, অনেকে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। সর্বত্র বিরাজ করে আতঙ্ক।
গতকাল ভূমিকম্পের মাত্রা ও উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে মার্কিন সংস্থা ইউএসজিএস-এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনুভুত হয়। এর উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের হাখা থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। ভূ-পৃষ্ঠের ৪২ কিলোমিটার গভীরে এ কম্পনের সৃষ্টি হয়। মাঝারি মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট, খুলনা, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রামে। গতরাত ১২টা পর্যন্ত দেশের কোথাও থেকে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
তবে নগরীর হালিশহর, চকবাজার ও বহদ্দারহাটে হেলে পড়ে ভবন। রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে পড়ে এবং কয়েকটি ঘরে ফাটল সৃষ্টি হয়। এছাড়া রাঙামাটিতে ৩ জন আহত হয়। এছাড়া বড় কোন ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৩৮ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে। ভারতের মিজোরামের সাইহা থেকে ওই এলাকার দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটারের মত। চট্টগ্রাম বিভাগের পাশাপাশি ঢাকা, বারিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগেও এ ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভোরে বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার উঁচু ভবনগুলো দুলে উঠলে অনেকেই ঘুম ভেঙে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা অনেকে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন। কেউ কেউ ঘরের জিনিসপত্র কাঁপতে থাকার ভিডিও শেয়ার করেছেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ভুটান ও চীনের কিছু এলাকা থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে।
ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের প্লেট বাউন্ডারি লাইনে একটি মাইক্রোপ্লেটের কাছাকাছি বার্মা ‘সেগিং ফল্টে’ এ ভূমিকম্প হয়েছে। ওই অঞ্চল বেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। কিছুদিন আগেও এ জায়গায় ভূমিকম্প হয়েছিল। এ ফল্ট লাইনে বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা রয়েছে।
ঢাকার আবহাওয়া অফিসে দায়িত্বরত আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ জানান, তীব্রতার পরিমাপে এটি ছিল মাঝারি মাপের ভূমিকম্প। ঢাকার আগারগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস থেকে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ৩৪৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।