জুমের ফসলে ছেয়ে গেছে সবুজ পাহাড়

7

এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

পাহাড়ে এখন জুমের পাকা সোনালি ফসল ঘরে উঠছে। শুরু হয়েছে পাকা ধান কাটা। দীর্ঘ প্রায় নয় মাসের পরিশ্রমে ফলানো ফসল ঘরে তুলছেন জুমচাষীরা। গত বছরের মতো এবার মৌসুমেও করোনার কারণে চাষাবাদে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন চাষীরা। এরপরও জুমের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তারা। প্রতিবছর পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বিস্তর জুমচাষ হয়। জুমচাষ পাহাড়িদের আদি পেশা। এটি তাদের জীবিকার অন্যতম উৎস। পরপর দুই বছর করোনার কারণে পার্বত্য তিনটি জেলায় জুম চাষে ব্যাহত সৃষ্টি হয়। এরপরও চাষাবাদে ভালো ফলন হয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিবছর পৌষ ও মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালে জঙ্গল সাফ করে রোদে শুকিয়ে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জুমক্ষেত প্রস্তুত করা হয়। বৈশাখ ও জৈষ্ঠ মাসে পোড়ানো জুমের মাটিতে সূঁচালো দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, তুলা, কাউন, ভূট্টা, ফুটি, চিনার, শিম, যব ইত্যাদি বীজ বপণ করা হয়। এছাড়া জুমে ছিটানো হয় তিল, মরিচ, ধনেপাতাসহ ইত্যাদি বীজ। প্রায় ৮-৯ মাস পরিশ্রম শেষে ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে ঘরে ওঠে পাকাধান। তার আগে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসেই জুমের ফসল তোলা শুরু হয়। শুরুতে পাওয়া যায় মারফা, মরিচ, চিনার, ভূট্টো ইত্যাদি ফসল। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্র্র্র্তিক মাসের মধ্যে পাকা ধান কাটার পর শেষে তুলা, তিল, যব ঘরে তোলা হয় কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে। পাহাড়ি এলাকায় যুগযুগ ধরে চাষাবাদ হয়ে আসছে জুম। জুমচাষীরা বলেন, করোনাকালীন নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে জুমের চাষাবাদ করতে হয়েছে। তবে যতটুকু চাষাবাদ সম্ভব হয়েছে, তাতে ভালোই ফসল ফলেছে। ইতোমধ্যে পার্বত্য এলাকায় জুমের পাকাধান কাটা শুরু হয়েছে। ফসল ঘরে তোলা হচ্ছে। জুমের পাকা ফসল ঘরে তোলার ভরা মৌসুম চলছে এখন।
উপযুক্ত পরিবেশ, মাটির উবর্বরাশক্তি ও অনুকুল আবহাওয়ার ফলে এ বছরও জুমে ধানসহ ফসলের ফলন ভালো হয়েছে। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জরিপে দেখা গেছে এবছর রাঙামাটি জেলায় ৫হাজার ৫শ ৮০ হেক্টর জমিতে ঝুম চাষ করা হয়েছে। কিছু দিন হলো ঝুম চাষের ধান কাটা শুরু হয়েছে। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৫৫ শতাংশ পরিমান ধান কাটা হয়েছে। এবছর ঝুম চাষে প্রতি হেক্টর জমিতে ১ দশমিক ৩ শতাংশ মেট্রিক ধান উৎপাদন হয়েছে।