জীবনের সমীকরণ

113

 

গভীর রাতে মন খারাপের কেমন যেনো একটা গন্ধ ভাসে। কাজের মধ্যে গভীর মনোযোগে থাকা মনও হুট করে খাপছাড়া হয়ে উঠে। আবেগের সাথে জেগে জেগে উঠে খানিকটা জীবনবোধ। কি করেছি, কি পেয়েছি, কি চাই আর কিবা পাবো? এমন অগণিত প্রশ্নের দোলাচলে দমটা যেনো প্রায় বন্ধ-ই হয়ে আসে।
জীবনের উদ্দেশ্য কি তা জেনেও অজানা। ক্ষমতাধর হওয়ার প্রলোভন জাগলে কখনো কখনো আলেকজাÐার দ্য গ্রেট এর জীবনে উঁকি দিই। বিশ্ব জয়ের নেশা যেনো তাকে দানবে পরিণত করেছিলো। মানুষটা যতটা না ক্ষমতাবান হওয়ার কারণে ইতিহাসের পাতায় উঠেছে, তার চেয়ে বেশি মহান হয়ে আছেন জীবনের শেষবেলায় তার জীবনবোধের ৩ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে। এডলফ হিটলারের মতো আস্তো একটা দৈত্যর গল্প পড়েছি, যে কিনা কোটি কোটি মানুষ হত্যা শেষে নিজেই ট্রাঙ্কে লুকিয়েছিলো আত্মজীবন রক্ষায়। এমন জীবন কিবা কাজে আসে যেখানে সিংহের মতো গর্জন শেষে মরতে হয় কীট-পতঙ্গের মতো। জীবনের কাছে সাধারণ হয়ে থাকা আর থাকতে পারার প্রার্থনা ছাড়া আসলে কিছু চাওয়ার সাহস করতে চাই নি কখনো। সাধারণত্ব যতোই পিষে মারুক, যতোই গিলে খাক, তবুও এই সাধারণত্বটাই জীবন খাতার হিসেবটাকে অসাধারণ রাখতে সাহায্য করে।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে ‘ক্ষমতা’ পাওয়ার প্রলোভন মানুষের মাঝে এতো তীক্ষ্ন কেনো? কোথায় যেনো পড়েছিলাম, ‘ক্ষমতা’ হলো জ্বলন্ত আগুণের মতো। যদি তুমি একে নিয়ন্ত্রণ করতে না জানো, তবে সে তোমাকেই জ্বালিয়ে খাঁক করে দিবে।’ এ জগতে ক্ষমতায়ন, কর্তৃত্বায়ন আর মিছে সম্মান রক্ষার দ্বন্ধ হয়তো অতি প্রাচীন। কিন্তু যে জগতে অর্থহীন মানুষগুলোর পাশটা শূন্যনদী, সে জগতে ভালোবাসাও এক মৃত ইতিহাস। দিনশেষে জীবনের সমীকরণ মৃত্যু আর বাঁচার তাড়না ভালোবাসা সঙ্গ করে যে পথেই হেঁটে যেতে থাকা।