জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যুবলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

115

নিজস্ব প্রতিবেদক

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবুসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আবু। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৩ সালে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে এখনও একই পদে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় ৫ বার গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেছি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবু আমার আম্মার আপন চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে আমার পৈত্রিক জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাউন্সিলরের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলছে। ২০০৩ সালে বায়েজিদ বোস্তামী থানার বালুচড়া ক্রাউন গার্মেন্টসের জুট ব্যবসা নিয়ে গোপাল কৃষ্ণ মূহুরি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শিবির ক্যাডার সাইফুল ও গিট্টু নাছিরের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওইসময় কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবু সাইফুলের পক্ষ নেন। এ বিরোধের জের ধরে শিবির ক্যাডার গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্নাসহ সাহেদ ইকবাল বাবুর বাড়িতে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছিল। হামলার ঘটনায় সাহেদ ইকবালের ছোট ভাই বাদি হয়ে ওই সময় বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এতে আসামি করা হয় আমাকে এবং আমার মেজ ভাই মো. সেলিমকে। সাহেদ ইকবাল বাবুর পরোক্ষ সহযোগিতায় ২০০৫ সালের ১০ ফেব্রæয়ারি বিএনপি জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে আমাকে র‌্যাব-৭ গ্রেপ্তার করার পর ১১ ফেব্রæয়ারি জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়- গিট্টু নাছিরের সহযোগি ল্যাংড়া আবুকে গ্রেপ্তার। গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব আমাকে ৫ দিন গুম করে ক্রসফায়ারের প্রস্তুতি নিলে প্রয়াত চট্টল বীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী র‌্যাবসহ সেনা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার প্রাণ বাঁচানোর আবেদন করেন এবং এসব হয়রানিমূলক মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নেন। র‌্যাবের দায়ের করা এ মামলায় দীর্ঘ ১৭ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সব মামলা থেকে রেহাই পাই।
তিনি আরো দাবি করেন, ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমানে চসিক কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবুর ছোট ভাই জুবায়ের আরেফিন। বর্তমানে জালালাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় জামায়াতের কর্মীদের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৩-১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে খোদ এসব লোকজনকে সাহেদ ইকবাল বাবু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
২০২০ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য আমি আবুল কালাম আবু, সাহেদ ইকবাল বাবু, হাজী মো. ইব্রাহিম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করি। পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকের সিদ্ধান্তে দল থেকে প্রার্থী ঘোষণা করেন মো. ইব্রাহিমকে। আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হাজী ইব্রাহিমের পক্ষে কাজ করেছিলাম। পরবর্তীতে নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থী সাহেদ ইকবাল বাবু চসিকের কাউন্সিলর নির্বাচনে জয়ী হবার পর থেকেই একর পর এক মামলা-হামলার শিকার হচ্ছি আমি ও আমার পরিবার। সাহেদ ইকবাল বাবুর পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করার কারণে নির্বাচনের পর থেকে আমার উপর বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিসহ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বাবু ও তার লোকজন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ১৪ ডিসেম্বর আমার আপন খালাতো ভাই কাশেমের দায়ের করা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) মূলে একটি প্রসিকিউশনে ওয়ারেন্টমূলে আমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই একটি স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইনে আমার ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। আমাকে সন্ত্রাসী ও গিট্টু নাছিরের সহযোগী ব্যাখ্যা দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, আজকে সংবাদ সম্মেলনের কথা জানতে পেরে সকালে সরাসরি হুমকি দেন সাহেদ ইকবাল বাবু ও তার লোকজন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।