অবশেষে মুক্তি পেলেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৩৯ মিনিটে তিনি বরগুনা জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। আটক হওয়ার ৪৮ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার তিনি জামিনে মুক্তি পেলেন।
এর আগে বিকেল ৪টায় বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম জাহিদ হাসান স্বাক্ষরিত মিন্নির রিলিজ অর্ডার বরগুনা জেলা কারাগারে পৌঁছায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
পরে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একই দিন রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন (১৭ জুলাই) মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর কয়েক দফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় জামিন চেয়ে মিন্নি হাইকোর্টে আবেদন করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মিন্নির জামিন আদেশ দেন। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে মিন্নিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর নো-অর্ডার (কোনও আদেশ নয়) দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এর ফলে মিন্নির জামিনে মুক্তিতে সব বাধা কেটে যায়।
কিছু শর্ত বেঁধে দিয়ে মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এ সময়ে মিন্নি তার বাবার হেফাজতে থাকবেন এবং জামিনের অপব্যবহার করলে বিচারিক আদালত তার জামিন বাতিল করতে পারবেন।