জামা কাপড়ের সাথে জুতার দোকানে ভিড়

13

জামা কাপড়ের সাথে
জুতার দোকানে ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
আসছে ঈদ উৎসবকে ঘিরে আয়োজনে মেতেছে সবাই। দেশের ছোট-বড় সব মার্কেটের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মার্কেটগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। সবারই উদ্দেশ্য ঈদ শপিং। সব বয়সের মানুষেরই আগ্রহ রয়েছে কেনাকাটায়। পরিবারের সবার জন্যই এ সময় চাই নতুন সবকিছু। পোশাকের পরই যে বিষয়টি আসে তালিকাতে, তা হচ্ছে জুতা। নতুন পোশাকের সঙ্গে নতুন জুতা না হলে একদম চলে না। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, আগ্রাবাদ, জিইসি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় শো রুমের পাশাপাশি ক্রেতাদের আকর্ষণ ফুটপাতেও। অনেক কালেকশন রয়েছে যেসব শো রুমে না থাকলেও ফুটপাতে পাওয়া যাচ্ছে। আবার দামও অনেকটা কম। আবার বেশিরভাগ কোম্পানিগুলো ক্রেতাদের রুচি আর চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে হরেক রকম ডিজাইনের জুতা-স্যান্ডেল দিয়ে শোরুম সাজিয়েছে। যাতে করে ফ্যাশন প্রেমীরা রুচি ও পছন্দসই জুতা কিনতে পারে। ছোট বড় সবার ঈদের পোষাকে সাথে চাই নতুন জুতা। তাই সবার নজর থাকে ফ্যাশনের প‚র্ণতার দিকে। সবকিছু কেনার পর যদি মানানসই এক জোড়া জুতা বা স্যান্ডেল না হয়, তাহলে যেনো ফ্যাশনে প‚র্ণতা পায় না বলে জানান ক্রেতারা।
তবে ঈদে বরাবরের মত পোশাকের সঙ্গে মানাবে, এমন জুতা-স্যান্ডেলের প্রতি জোক বেশি ছেলে-মেয়ে উভয়ের। এবারও কালো বা চকলেট রঙের স্যান্ডেলের পরিবর্তে হালকা শাইনি বা অ্যান্টিক রঙের চলটা বেশি সবার কাছে। এবারের ঈদে ফ্যাশন-সচেতনদের পায়ে শোভা পাবে অ্যান্টিক সোনালি, রুপালি বা মেরুন রঙ, টার্কোয়েজ, সাদা, বেইজ, বেনসন কালারের জুতা-স্যান্ডেল।
প্রতিবারের মত মেয়েদের ফ্যাশন আর পছন্দের দিকে লক্ষ্য রেখে অধিকাংশ ফ্যাশন হাউজগুলো তাদের স্যান্ডেলের ডিজাইনে রেখেছে ভিন্নতা। নিজস্ব ধারাতেই স্যান্ডেলের ডিজাইন করেছে ফ্যাশন হাউজ আর কোম্পানিগুলো। তবে মেয়েদের বেশির ভাগ স্যান্ডেলই ফ্ল্যাট ও চটি স্যান্ডেল এখনো ট্রেন্ডি। অনেকে ফ্যাশন হাউজ পুঁতি, বিডস দিয়ে তৈরি নান্দনিক ডিজাইনের স্যান্ডেল বাজারে এনেছে এবারের ঈদে। এছাড়া চোখে পড়ার মতো রয়েছে বড় পাথরের ব্যবহারে ফুলের নকশা করা স্যান্ডেল, যার পেছনের অংশে চেইন রয়েছে। তবে বেশি উচ্চতার নয় স্যান্ডেলগুলো। একটু জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে করা হয়েছে কারচুপি।
তবে ঈদবাজারের সংগ্রহ এবারও এসেছে পিওর লেদার ও কৃত্রিম চামড়ায় তৈরি স্যান্ডেল। ফরমাল শুর মধ্যে দেখা যাচ্ছে ফ্যাশনেবল মোকাসিন, লেদার ও এসপাড্রিল কিংবা সেমি বুট শু। আপনি যদি স্টাইলিশ ক্যাজুয়াল চান তাহলে স্নিকার হবে বেশ মানানসই।
রঙের বৈচিত্র্য মিলছে ছেলেদের পায়েও। কালো বা বাদামির পাশাপাশি সাদা, সবুজ, হলুদ, নীল বা কমলা রঙের জুতাও পছন্দ করছেন অনেকে। তবে আবহাওয়ায় সাথে মিল রেখে আরাম পেতে মিলছে ফরমাল লুকের স্নিকারও। কাপড় ছাড়াও সিনথেটিক ও লেদারে তৈরি হয় এসব স্নিকার। এ ছাড়া যারা ব্র্যান্ড এড়িয়ে যেতে চান তারা নগরীর বিভিন্ন ফ্যাশনমলে পেতে পারেন দেশি বিদেশি জুতার বাহার।
এছাড়া নতুন জুতার আকর্ষণ সবার মাঝেই দেখা যাচ্ছে। ছেলেদের জন্য ব্র্যান্ডের জুতায় রয়েছে বিশাল আয়োজন। ঈদের সকাল মানেই নতুন পোশাক পরে দিনের শুরু। নতুন জামার সঙ্গে চকচকে নতুন জুতা না হলে চলেই না। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে জুতার ডিজাইনাররা ছেলেদের কালেকশনে রেখেছেন লাইটওয়েট সাদা আউটসোল ও হাইনেক লেদার আপারের কম্বিনেশন এবং ব্রোগ লেদার আপার ও বাই কালার টিআরপি ক্যাজুয়াল আউটসোল সংবলিত স্মার্ট ক্যাজুয়াল।
নামিদামি শো-রুমের মধ্যে বাটা, ডাটা, লোট্টো, এপেক্স, বে, নিয়ে এসেছে স্টাইলিশ নতুন প্রিমিয়াম রেড লেবেল কালেকশন, যাতে আছে নিট, মেশ ও প্রিন্টেড ডিজাইনের লাইটওয়েট আউটসোল। ঈদের সময় আমাদের দেশের ছেলেরা পাঞ্জাবি, কাবুলি এবং শেরওয়ানির মতো ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে পছন্দ করেন। তাদের এ ধরনের পোশাকের সঙ্গে উপযুক্ত জুতার পরিকল্পনা করেই তারা নিয়ে এসেছে এসব পোশাকের সঙ্গে মানানসই জুতার বিশাল কালেকশন। এসব কালেকশনে আছে হ্যান্ড ফিনিশড, স্কুপি কমফোর্টেবল ফুটবেড ও লাইটওয়েট সংবলিত লেদারের টেক্সচার ও ট্রেন্ডি এথনিক ডিজাইন। অভিজাত পোশাকের সঙ্গে এমন সব জুতার মেলবন্ধন পরিধানকারীকে করে তুলবে অনন্য।
জুতা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের নতুন ডিজাইন গ্রাহকের পছন্দ ও রুচিকে মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়। ঈদ শপিং নিয়ে এদেশের মানুষের আগ্রহ থাকে অনেক। সেটা বিবেচনা করে প্রতিবারই আমরা ভিন্নধর্মী আকর্ষণীয় ডিজাইন নিয়ে আসি।
আগ্রাবাদ এলাকায় কথা হয় মো. সোহেল নামে এক ক্রেতার সাথে। তিনি পূর্বদেশকে বলেন, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় রাত হলে জুতার দোকানের আসর বসে। আর এখানে ভিন্ন কালেকশনের বিদেশী ভাল জুতা পাওয়া যায়। বেশিরভাগ জুতা টেকসইও হয়। তাই আমি প্রায়ই এখান থেকে জুতা নিই। এবারেও ঈদ উপলক্ষে জুতা নিতে এসেছি। বাজেটের মধ্যে দেখে নিয়ে নিব।
জুতার দোকানদার মো. তারেক বলেন, ঈদ উপলক্ষে বেশ বেচাবিক্রি হচ্ছে। আমরা দেশিয় আইটেমের পাশাপাশি চীন, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের জুতা রেখেছি। যা টেকসই, মজবুত ও পড়তে আরাম।
দাম বেশি রাখা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সীমিত লাভ রেখে একদম নামমাত্র মূল্যে আমরা জুতা বিক্রি করছি। সুতরাং, দাম নিয়ে কোন ক্রেতাদের কোন সংশয় নেই।