জানুয়ারিতে ছাত্রছাত্রীরা সব বই পাচ্ছে না

18

শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়। বরাবরের মতো বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে। তবে ছাপার কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় সব বই হাতে পেতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। কাজের শুরুতেই কাগজ ও কালির সংকট, ছাপা সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, দুটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম, প্রাথমিকের বই নিয়ে মুদ্রণ-মালিকদের সঙ্গে দেরিতে চুক্তির কারণে এবার বইয়ের কাজ অন্যবারের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে। তবে সংকট কাটিয়ে এখন পুরোদমে চলছে ছাপার কাজ। বছরের প্রথম দিনেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে জোর চেষ্টা চালালেও প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা সব বই হাতে পাবে না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের তথ্য অনুসারে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ ৯ হাজার কপি বই ছাপানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিকে ৯ কোটি ৯২ লাখ ৮৩ হাজার, মাধ্যমিকে ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৮, ইবতেদায়ি শ্রেণিতে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার, দাখিলে ছাপা ৪ কোটি ১ লাখ ৪৪ হাজার কপি বই ছাপা হচ্ছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষার বই ছাপা হচ্ছে ২ লাখ ১২ হাজার ১৭৭ কপি। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ৬৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোতে বই পাঠানো শুরু হয়েছে। কোনো উপজেলাই বই পাওয়া থেকে বাদ থাকবে না। মাধ্যমিকের ৮০ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ৬১ শতাংশ বই ইতিমধ্যে স্কুলগুলোতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব স্কুলেই বই পৌঁছে যাবে। তবে প্রথম দিনই সব শিক্ষার্থীর হাতে শতভাগ বই দেয়া সম্ভব হবে না এটা সত্য। বাকি বই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে স্কুলে পৌঁছানো হবে।’ তবে মুদ্রণ-মালিকরা বলছেন, বর্তমানে কোনো সংকট না থাকলেও জানুয়ারির মাঝামাঝিতে সব বই তুলে দেয়া সম্ভব নয়। মাধ্যমিকের কাজ কিছুটা এগোনো থাকলেও প্রাথমিকের কাজ অনেক পেছানো রয়েছে। কারণ প্রাথমিকের বই নিয়ে মুদ্রণ-মালিকদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে ৩ ডিসেম্বর। নিয়মানুযায়ী চুক্তির ৫০ দিনের মধ্যে জরিমানা ছাড়া বই সরবরাহ করতে হয়। সেই হিসাবে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের মধ্যে এনসিটিবিকে বুঝিয়ে দেয়ার কথা। অন্যদিকে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই দেয়ার কথা জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। অর্থাৎ চুক্তি অনুযায়ী সব বই সরবরাহ করতে করতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেসের মালিক এস এম মহসিন বলেন, ‘পুরোদমে ছাপার কাজ চলছে, যাতে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা একবারে নিরাশ না হয়। মন্ত্রণালয় থেকেও সে রকমই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে সব উপজেলায় বছরের প্রথম দিন বই পৌঁছানো যায়। প্রাথমিকের কাজ দেরিতে শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।