জাতীয় নির্বাচনে ৬টি আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব

19

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, ৭১’এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের ডাক দিয়ে বাঙালি জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন এবং ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাকে পরিপূর্ণ স্বীকৃতি ও সমর্থন দানে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১০ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে ১৭ এপ্রিল এই সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ দেশ-বিদেশে আইনসিদ্ধ স্বীকৃতি অর্জন করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা সরকারের শপথ গ্রহণের এই দিনটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি সোপান। আজ আমরা স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস পালন করলেও এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করি না। অথচ মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠা ও তার শপথ গ্রহণ না হলে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ঐতিহাসিক ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার দিবস পালনোপলক্ষে ইফতার মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি ধারাবাহিক লড়াই সংগ্রাম ও আন্দোলনের চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণ। এই ক্ষণটিতে পৌঁছাতে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ২৩ বছর বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল পরিসমাপ্তিতে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সেই স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করতে না পারলে যে কোন মুহূর্তে জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। কারণ এখনো মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির ক্রীড়নকরা অশুভ অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ. জ. ম. নাছির উদ্দীন বলেছেন, মুজিবনগর সরকার দিবসটি স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তার অভ্যূদয়ের পেছনে এটি সুসংগঠিত ও আইনসিদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের ঐতিহাসিক মাইলফলক। এদিন বাঙালি বিশ্ববাসীকে জানান দিয়েছিল বাঙালি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন ভূমির ঠিকানা রচনা করেছে। এই স্বাধীন জাতির বাসভূমিকে হানাদার মুক্তকরণে যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে এই দিবসটিতেই। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন এবং নানামুখী বহুমাত্রিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য আমাদের চেতনাগত উন্নয়ন ও বিকাশের ধারাটি ক্ষেত্র বিশেষে গতি হারিয়েছে। চেতনাগত চিন্তার ঐক্যই এখন আমাদের সকলের আরাধ্য হওয়া উচিত। তা না হলে আমরা কেউ নিরাপদ তো নই, জাতীয় অস্তিত্বও বিপন্ন হতে পারে।
নাছির আরো বলেন, আমাদের মধ্যে মত ভিন্নতা ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাসহ যা কিছুই থাকুক না কেন, মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না থাকে তাহলে আমাদের কারো পায়ের নিচে মাটি থাকবে না। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির অস্তিত্ব রক্ষার অগ্নি পরীক্ষার মাহেন্দ্রক্ষণ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন, তাকেই বিজয়ী করার জন্য এখন থেকে আমাদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের মধ্যে মত ভিন্নতা থাকতেই পারে, তবে তাতে যেন ব্যক্তি স্বার্থ কেন্দ্রীক ও অনৈতিক উচ্চাভিলাসী আচরণের বহিঃপ্রকাশ না ঘটে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অতীতেও প্রমাণ করেছে এখনো করছে এবং আগামীতেও করবে- আমরা ঐক্যবদ্ধ। বৃহত্তর রাজনৈতিক ও দলীয় স্বার্থে ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদেরকে অবশ্যই ব্রত গ্রহণ করতে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার ৬টি সংসদীয় আসন অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সিডিএ চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক জালাল উদ্দীন ইকবাল, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমিনুল হক, কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমদ, অধ্যাপক আসলাম হোসেন, রেজাউল করিম কায়সার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আবুল হাসেম বাবুল, কাজী রাশেদ আলী জাহাঙ্গীর, আশরাফুল আলম, ইউনিট আওয়ামী লীগের সেলিমুর রহমান।
সভার প্রারম্ভে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতা, সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং করোনাকালীন মহানগর আওয়ামী লীগের যে সকল নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি