জলাবদ্ধতা ঠেকাতে সরানো হচ্ছে নালা-খালের বাঁধ

49

লঘুচাপের সাথে মৌসুমি বায়ু প্রবল অবস্থায় সক্রিয় থাকার কারণে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জারি করেছে সতর্কতা সংকেত। বৃষ্টিপাত থাকতে পারে আরো দুই একদিন। বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর নিম্নাঞ্চলে জমছে পানি। জোয়ারের পানিও উঠছে কোনও কোনও এলাকায়।
এদিকে বৃষ্টির ফলে যাতে নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য নালা ও খালে দেয়া বাঁধ সরিয়ে নিচ্ছে জলাবদ্ধতা নিরসন মেগাপ্রকল্পের তদারক সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া সেনাবাহিনীর চারটি তদারক টিম এলাকাভিত্তিক কাজ করছে।
প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলী বলেন, বৃষ্টির সময় আমাদের চারটি টিম নিয়মিত তদারকি করছে। যেখানে পানি আটকাচ্ছে সেখানে সাথে সাথে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নালা ও খালের বাঁধগুলো সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। দ্রুত পানি নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের সব কাজ চলমান আছে।
বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে জলাবদ্ধতা নিরসন মেগাপ্রকল্পের অধীনে এপ্রিল-মে মাসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নালা ও ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করার কথা ছিল। এ সময়ে করোনার কারণে নালা ও ড্রেন পরিষ্কার বিলম্বিত হয়। তবে প্রকল্পের অধীনে অন্যান্য কাজ ঠিকই এগিয়ে নিতে থাকে সেনাবাহিনী। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে নালা ও ড্রেনের কাজে হাত দেয়া হয়। খাল থেকে মাটি উত্তোলন, ড্রেন নির্মাণ, জলাধার এবং ব্রিজ- কালর্ভাট নির্মাণ কাজ শুরু করে। এসব কাজ করতে গিয়ে নালা ও ড্রেনের বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিতে হয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য দেওয়া এসব বাঁধ এখন ফাঁদে রূপ নিয়েছে। যার কারণে এসব বাঁধ সরাতে বাধ্য হচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে অনেকগুলো বাঁধ সরিয়ে পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মতে, বৃষ্টির মধ্যে ৪টি রেসপন্স টিম তদারকিতে আছে। নালা ও ড্রেনের পানি যাতে আটকে না থাকে সেজন্য কাজ করছে সেনাবাহিনী। প্রকল্পের ড্রেন সংস্কার, ড্রেন ও নালা বড় করা, সিলট্যাপ স্থাপন, রিটেইনিং ওয়াল স্থাপন কাজ চলমান আছে। ৫টি খালের মুখে রেগুলেটর স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। বৃষ্টি হলে পানি জমে এমন স্থানগুলোতে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নির্ধারিত স্থানে গভীরতা ও প্রশসস্ততা বাড়নোর কাজ করা হয়েছে। একশ শ্রমিকের সমন্বয়ে গঠিত চারটি টিম নিয়মিত তদারকিতে আছে পুরো নজরজুড়ে।
নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গৃহীত ৫ হাজার ৬শ ১৬ কোটি ৪৯ লক্ষ ৯০ হাজার টাকায় ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক চলমান মেগাপ্রকল্পটি ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্প বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএ’র সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। একই বছরের ২৮ এপ্রিল নালা পরিষ্কারের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী। প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল খনন করা, খালের প্রশস্ততা ও গভীরতা বাড়ানো, মাটি উত্তোলন, প্রতিরোধ দেওয়াল দেয়া, ড্রেন সংস্কার ও নতুন ড্রেন তৈরি করাসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা থাকলেও প্রায় ৫২ শতাংশ কাজ করতে সক্ষম হয় বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। যার কারণে বাড়ানো হয় প্রকল্প মেয়াদ।