জলবায়ু সম্মেলনের ব্যর্থতার ফল হবে ভয়াবহ : জাতিসংঘ

18

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের লাগাম টানতে আরও কার্যকর ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বিশেষত চলতি মাসের শেষে স্কটল্যান্ডের গøাসগোতে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনের (কপ-২৬) সফলতার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সবাই। এর আগেই জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, কপ-২৬ ব্যর্থ হলে বিশ্বজুড়ে চরম সংঘাত ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। তবে সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, কপ-২৬-এ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পথ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির চেয়ে কঠিন হতে পারে। খবর একটি অনলাইন বার্তা সংস্থার
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে গত রবিবার বলা হয়েছে, ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোয় শুরু হচ্ছে কপ-২৬। চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। ১২০ জনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং প্রায় ৩০ হাজার জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক এবারের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এই সম্মেলনে বিশ্বের দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের লাগাম টানতে কার্যকর একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তিতে পৌঁছানোকে কপ-২৬-এর সফলতা বিবেচনা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কপ-২৬-এর আগে ইতালির রাজধানী রোমে বৈঠকে বসছেন ধনী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট জি-২০-এর নেতারাও।
আসন্ন কপ-২৬ সামনে রেখে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-বিষয়ক এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা সতর্ক করে বলেছেন, এই সম্মেলনের ব্যর্থতা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা। দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে সফল না হলে ক্রমবর্ধমান অভিবাসন ও খাদ্যসংকট বিশ্বজুড়ে সংঘাত ও বিশৃঙ্খলার কারণ হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা স্থিতিশীল রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তুলেছি। বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ‚্যতদের স্রোত এই শৃঙ্খলাকে হুমকিতে ফেলেছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ও ঐক্যবদ্ধ উপায় খুঁজতে ব্যর্থতা মানে খাবারের প্রাপ্যতা কমে আসা, যা বিশ্বজুড়ে আরও বেশি মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলবে। দেশে দেশে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতার কারণ হবে। তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি আমাদের তৈরি পুরো রাষ্ট্রকাঠামো ধ্বংস করে দিতে পারে।
এবারের জলবায়ু সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যোগ দিচ্ছেন। তবে গ্লাসগোয় যাচ্ছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চিন পিং ও পুতিনের অনুপস্থিতি সম্মেলনে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা। তিনি বলেন, সব দেশের রাষ্ট্র কিংবা সরকারপ্রধানেরা সম্মেলনে যোগ দেবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এসব দেশের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।