জলবায়ু : ‘বেইমানি’ করছে ধনী দেশগুলো

3

 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যে ক্ষয়ক্ষতি, তার ক্ষতিপূরণ ছাড়ে ধনী দেশগুলো নানা ছুতো করে এক ধরনের বেইমানি করছে বলে সরব হচ্ছে গরিব দেশগুলো। মিসরে আসছে নভেম্বরের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের (কপ২৭) এর আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আলোচনা রাখার আশা করছে তারা।
তার আগে বৃহস্পতিবার জার্মানির বনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনার চূড়ান্ত দিনে এই বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রাখা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। বৈঠকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ধনী দেশগুলো কয়েকশ বছর ধরে যেসব ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ করে আসছে তারই জের টানতে হচ্ছে গরিব দেশগুলোকে।
তারা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য তাদের অর্থ দরকার, কারণ ধনী দেশগুলোর তুলনায় তাদের বেশি ভুগতে হচ্ছে এবং এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপখাইয়ে নেওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতিও তাদের কম। গত বছর জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন কপ২৬ এ দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো ও উন্নয়নশীল দেশগুলো কার্বন নির্গমন কমাতে রাজি হয়েছিল এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে যে ধনী দেশগুলো এর জন্য একটি ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া চালু করবে। কিন্তু বনের আলোচনায় তারা অভিযোগ করছে, এই বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ।
পরিবেশ বিষয়ক থিংক ট্যাংক ই৩জি-র অ্যালেক্স স্কট বলেন, “(উন্নয়নশীল দেশগুলো) ছাড় দেওয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছিল এই বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যে (ধনী) দেশগুলো আলোচনা শুরু করবে এবং ক্ষয়ক্ষতি মেটাতে কীভাবে অর্থায়নের প্রক্রিয়া শুরু করা যায় তা দেখবে। “কিন্তু এখানে আমরা তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। বরং এখানে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে আলোচনা করা হচ্ছে যে আমরা কিছু সমস্যা কীভাবে নিজেরাই সমাধান করতে পারি।” অনেক অংশগ্রহণকারীর জন্যই, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে ক্ষয়ক্ষতি।
কোস্টা রিকার পরিবেশবাদী গোষ্ঠী অ্যাসোসিয়েশন লা রুতা দেল ক্লিমার আদ্রিয়ানা ভাসকুয়েজ রদ্রিকেজ বলেন, “এরইমধ্যে আমরা ২৫ বছর ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে আলোচনা করে পার করেছি। আমাদের অনেক পরিবার আছে যারা বাড়িঘর হারিয়েছে, তাদের ফসল হারিয়েছে, এবং একই সময়ে, আমরা ঋণনির্ভর হয়ে পড়ছি।” উন্নয়নশীল দেশগুলো বলে আসছে যে বর্তমানে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করছে, তার কারণ মূলত ধনী দেশগুলোর ঐতিহাসিকভাবে কার্বন নির্গমন করে আসা। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার একটি দায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের।