জলকদরে জব্দ ট্রলারটিতে ছিল ভারতীয় শাড়ি ও থ্রিপিচ

29

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের জলকদর খালে জব্দ হওয়া চোরাই পণ্যবাহী ট্রলার মালিকের সন্ধান করছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে ট্রলারটি জলকদর খালে প্রবেশের পর ভোরে স্থানীয়দের হাতে আটক হয়। এসময় ট্রলারটিতে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ট্রলারটি বাহারছড়ায় কারা এনেছে তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মায়ের দান নামক ট্রলারটির ডিজাইন দেখে মনে হচ্ছে এটি ভারতীয় ট্রলার। ট্রলারটির ভেতর সনাতন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় পাওয়া গেছে। এরকম ট্রলার বাংলাদেশে বানানো হয়না বলে অনেক জেলে জানিয়েছেন। ট্রলারটির মালিকের খোঁজ পেলেই প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।
তবে পুলিশের ধারণা বঙ্গোপসাগরে কারো ধাওয়া খেয়ে ট্রলারটি জলকদর খালে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ধাওয়া খেয়ে ট্রলারটি ছনুয়া কিংবা সাধনপুর অংশ দিয়ে জলকদর খালে ঢুকলেও অনেক জায়গায় নোঙর করতে পারতো। সেটা না করে কেন বাহারছড়ায় পৌঁছালো সেটাও রহস্যজনক। এর সাথে বাহারছড়ার কারো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তাও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। ট্রলারটি রতœপুরের যে জায়গায় ধরা পড়েছে সেখানে একটি ইটভাটা আছে। এই ইটভাটার মালিকসহ বাহারছড়ার কমপক্ষে তিনজন ব্যক্তিকে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাদের গতিবিধির উপর নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। সেই ট্রলারটিতে প্রকৃতপক্ষে কি ছিল তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও শাড়ি ও থ্রি-পিস থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন এলাকাবাসী।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়নি। মামলা হলেই লুটকৃত মালামাল উদ্ধার করা হবে। এক্ষেত্রে যাদের বাড়িতেই লুটকৃত শাড়ি ও থ্রি-পিস মিলবে আইনানুযায়ী তাদেরকে আসামি করা হবে। সেখানে শাড়ি ও থ্রি-পিস লুট করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন এমন মানুষও আছেন। সুতরাং অনেকেই বিনা অপরাধে শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় ঘটনা উদঘাটনে কিছুটা সময় নেয়া হচ্ছে।
বাহারছড়ার ইউপি সদস্য এবাদুল হক বলেন, সাধারণ মানুষ ভোর ৪টার দিকে ট্রলারটি আটক করে। প্রথমে অনেকেই ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে কাছে গিয়ে দেখেছে সেখানে সব অবৈধ পণ্য ছিল। চোরাই মাল আসার বিষয়টি প্রকাশ পেলে তাৎক্ষণিক হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষ সব লুটে নেয়। ট্রলারের মেশিন ছাড়া সব নিয়ে গেছে। দুপুরের দিকে মানুষের মুখ থেকে শোনা গেছে সেই ট্রলারে ছিল সব থ্রি-পিস কাপড়। পরে পুলিশ এসে ঘটনার তদন্ত করছে। তারা কয়েকজনকে সন্দেহ করছে। পুলিশের হাতে কেউ ধরা পড়লেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, ‘ট্রলারটি জলকদর খালে কিভাবে আসলো সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কাজ করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নানারকম তথ্য মিলছে। স্থানীয় কেউ চোরাই পণ্য আনার সাথে যুক্ত কিনা সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। সন্দেহজনক কয়েকজন ব্যক্তির উপর নজরদারি রাখা হয়েছে। এছাড়া ট্রলার মালিকের হদিস পাওয়া গেলেও ঘটনার মূল রহস্য বের হয়ে আসবে।