জমজমাট কেনাকাটা ফুটপাতেও

27

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই নতুন পোশাক। ঈদকে বরণ করতে এবং নিজেদের বাহারি রঙে সাজাতে প্রস্তুত হচ্ছে মুসলিমরা। এ উপলক্ষে নতুন পোশাক কিনতে বিপণী বিতান ও শপিংমল গুলোতে ভিড় করছে মানুষ। ধনীদের পাশাপাশি থেমে নেই গরিব ও নিম্নবিত্তরাও। বৈশ্বিক মহামারিতে গত দুই বছরের ঈদ খুব একটা ভালো কাটেনি নি¤œবিত্তদের। তাই এবারের ঈদকে রাঙাতে নগরীর ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করেছে গরিব ও নিম্নবিত্তরা। সেখান থেকে কম মূল্যেই কিনে নিচ্ছেন ঈদের পোশাক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বহদ্দারহাট, জিইসি, আন্দরকিল্লা, ২নং গেইট, আগ্রাবাদ ও নিউমার্কেট এলাকায় ঈদকে সামনে রেখে নানা রকম পোশাক সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন ভাসমান দোকানিরা। শার্ট, প্যান্ট, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, বেল্ট, জুতার দোকানে হরেক রকম পোশাক সামগ্রী। দাম কম হওয়ায় এসব পোশাক কিনতে ভিড় করেছেন নি¤œবিত্তরা। কেউ এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে। আবার অনেকে এসেছেন একা। দোকান ঘুরে সেরে ফেলছেন ঈদের কেনাকাটা। এসব ক্রেতাদের অধিকাংশই রিকশাচালক ও দিনমজুর।
নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে ফুটপাতের একটি ভ্যান থেকে পাঞ্জাবি কিনছেন আলমগীর। ছেলে ও নিজের জন্য দুটি পাঞ্জাবি নিয়েছেন ১ হাজার টাকা দিয়ে। প্রতি পিস পাঞ্জাবি ৫০০ টাকা করে। তিনি জানান, সারাদিন রিকশা চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চলাতে হয়। আমি শহরে থাকি পরিবারের বাকী সদস্যরা গ্রামে থাকে। ঈদের আগে বাড়ি যাবো, তাই ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু কাপড় নিচ্ছি।
নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে জুতা কিনতে আসা নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইল জানান, ঈদ উপলক্ষে জুতা কিনতে আসলাম। এখানে ৫০০ টাকার মধ্যে ভালো জুতা পাওয়া যায়। পরিবারের জন্য কিনলাম। নিজের জন্য পরে নিব। বড় মার্কেটে অনেক দাম। আমরা সীমিত আয়ের মানুষ মার্কেটে যাওয়ার সামর্থ্য আমাদের নাই। তাই ফুটপাতই ভরসা। এখনে কম টাকায় সবার ঈদের কেনাকাটা হয়ে যাবে।
ঈদকে সামনে রেখে ফুটপাত দোকানিরা নানা রকম পণ্য নিয়ে বসেছেন। ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বিক্রি বাড়ছে বলে জানান তারা। বিভিন্ন গোডাউন থেকে কম দামে এসব পোশাক সামগ্রী কিনে নেন তারা। এরপর এসব পোশাক সামগ্রী কম লাভে বিক্রি করেন। গত দুই ঈদে ফুটপাতে তেমন বিক্রি হয়নি। তাই তাদের ব্যবসার মূলধনও সংসার চালাতে খরচ হয়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে ঋণ করে দোকান মালামাল তুলছেন বলে জানান অনেক ব্যবসায়ী।
নিউমার্কেটের দোকানি মো. এনাম বলেন, এখানকার ফুটপাতে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকায় ভালো জিনিস পাওয়া যায়। ১৫ রমজানের পর থেকে কাস্টমার বেড়েছে। জমা টাকা যা ছিল সব দিয়ে এখানে মালামাল তুলেছি। এখানে ব্যবসা হলেই পরিবারের মুখে আহার জুটবে। এ বছর ভালো ব্যবসা হবে বলে আশা করছি। ব্যবসা ভালো হলে গত দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।
বহদ্দারহাটের পাঞ্জাবি বিক্রেতা রিদুয়ান জানান, ১০০টি পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছি। এই পর্যন্ত প্রায় ৬০টি বিক্রি করেছি। আশা করছি ইফতারের আগেই সবগুলো বিক্রি হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় আরও কিছু পাঞ্জাবি নিয়ে আসবো। প্রতি পিস ৫০০ টাকা। দাম কম, মানও ভালো। এই বিক্রির টাকা দিয়েই আমাদের ঈদ হবে। পরিবারের ঈদকে রাঙাতে দিনরাত পরিশ্রম করছি।