জঙ্গল সলিমপুরের উচ্ছেদ ও উন্নয়নে পাঁচ সিদ্ধান্ত

60

নিজস্ব প্রতিবেদক

সীতাকুন্ডের জঙ্গল সলিমপুরের তিন হাজার ১০০ একর খাস জায়গা উদ্ধারে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জঙ্গল সলিমপুরের জায়গা উদ্ধার ও সেখানের জীববৈচিত্র ও পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় এই পাঁচটি সিদ্ধান্ত কার্যকরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভায় জঙ্গল সলিমপুরের উন্নয়ন ও উচ্ছেদে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জঙ্গল সলিমপুরে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা ৩১০০ একর জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা এবং জমি উদ্ধারের পর সেখানে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ-প্রতিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে সরকারের পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে কয়েকটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। গঠিত টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ এক মাসের মধ্যে উচ্ছেদ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন এবং উদ্ধারকৃত সরকারি খাস জমিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষাপূর্বক পরিবেশ বান্ধব অক্ষুণœ রেখে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করবে। জঙ্গল সলিমপুরে যারা প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন রয়েছে তাদের স্থায়ী ঠিকানায় স্ব স্ব উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। জঙ্গল সলিমপুরে সন্ত্রাস, ভূমিদস্যুতা ও মাদকের রাজত্ব কায়েম করে রাখা সন্ত্রাসী-আসামিদের গ্রেপ্তারে অবিলম্বে সাঁড়াশি চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান করে তা বাস্তবায়ন করার জন্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এর সিনিয়র সচিব সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনীর প্রধানগণ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ ছাড়াও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ে হাজারো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এছাড়া এখানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠেছে। গত এক মাস ধরে জেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া, গত ২৪ আগস্ট নির্মাণসামগ্রীসহ সব ধরনের অবৈধ মালামালের প্রবেশ ঠেকাতে এবং গ্যাস পাইপ লাইন ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সীতাকুন্ডের জঙ্গল সলিমপুরের চার পয়েন্টের রাস্তা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। একই সঙ্গে জঙ্গল সলিমপুরকে সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারিতে রাখতে বায়েজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকায় চেকপোস্ট এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে। গত দুইমাস ধরে জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে সরকারের তৎপরতার অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হলেও এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মধ্যদিয়ে এ প্রক্রিয়া আরোও জোরদার হয়েছে।