ছয় উপনির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলেই দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সদ্য সমাপ্ত ছয়টি উপ-নির্বাচন নিয়েতো কেউ একটি কথা বলতে পারেনি, সবখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। সরকার থেকে নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, করবেও না। কারণ আমরা জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করি, এটা অর্জন করতে আন্দোলনে বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি পর্যন্ত হয়েছি। দেশের জনগণের ভোটের অধিকারের পাশাপাশি আমরা ভাতের অধিকারও নিশ্চিত করেছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে অনির্বাচিত সরকার কখনোই ফিরবে না। যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে এমন সরকার আনতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন যারা দেখছেন, সেই দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসবেন দয়া করে। এটা আর জীবনে হবেনা’। তিনি বলেন,‘যারা অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন দেখছেন তাদের বলবো- ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ থাকলে রাজনীতিতে নামুন, ভোটারদের কাছে যান- জনগণ যাকে ভোট দেবে তারা ক্ষমতায় যাবে। এখানে আওয়ামী লীগ কোনোদিন হস্তক্ষেপ করবে না, করেও না। নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, এটাই হলো বাস্তবতা’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো দল আন্দোলন করছে, নির্বিঘ্নে সারাদেশে সভা-সমাবেশসহ সব রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। আমরা কোথাও বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু আমরা বিরোধী দলে থাকতে তারা আমাদের একটি মিছিল-সমাবেশও করতে দেয়নি, বোমা মেরেছে, গ্রেনেড মেরেছে, অকথ্য নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমাদের মাঝে গণতান্ত্রিক সহনশীলতা আছে এবং আমরা সেটা দেখাচ্ছি। তবে ভবিষ্যতে আর কেউ কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা সরকারের দায়িত্ব, কর্তব্য। অগ্নিসন্ত্রাসীদের নিয়ে তারা (বিএনপি) সভা-সমাবেশ করে বলে আমরা আতঙ্কিত হই, তারা কখন কোথায় অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা করবে, নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারবে। সেটা যেন তারা করতে না পারে সেজন্য আমাদের দল, দেশবাসী সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কেউ কিছু বলবে না। তবে আগুন সন্ত্রাস, নাশকতা কিংবা জঙ্গীবাদের কোনো চেষ্টা করা হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
অনির্বাচিত সরকারের দাবী উত্থাপনকারীদের কঠোর সমালোচনা করে সরকার প্রধান আরো বলেন, কেউ কেউ বলার চেষ্টা করে যে, দুই চার ছয় মাসের জন্য দেশে অনির্বাচিত সরকার থাকলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না! মহাভারত হয়তো অশুদ্ধ হবে না, কিন্তু সংবিধানের কী হবে? গণতান্ত্রিক ধারার কী হবে? যারা সংবিধানকে বাদ দিয়ে অনির্বাচিত সরকার আনতে চায়- তারা কী আদৌ দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে? দেশের জনগণ ভালো থাকলে তাদের এতো কষ্ট লাগে কেন? এতো দুঃখ পায় কেন?
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে হাড্ডিসার-কঙ্কালসার দেখিয়ে বিদেশ থেকে ভিক্ষা এনে নিজেরা বিএমডবিøউ গাড়িতে ঘুরবে, সেটা পারছে না বলেই এসব কথা বলছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গিবত গাওয়াই যাদের একমাত্র কাজ, তারাই অনির্বাচিত সরকার চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আছে এবং গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের বিপুল উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে, দেশের জনগণ তার সুফল পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরাই আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা এনেছিলাম। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একদলীয় প্রহসনের নির্বাচন করেছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে বরদাস্ত করে না। ভোট চুরির অপরাধে আন্দোলনের ফলে খালেদা জিয়া মাত্র দেড়মাসের মাথায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।