‘ছোট হচ্ছে’ ব্যাচেলরদের ইফতারির থালা

29

নিজস্ব প্রতিবেদক

রমজান মাস মুসলিমদের জন্য পবিত্র মাস। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান ভোররাতে সেহরি করে সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতার করেন। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্র্ধ্বগতির কারণে ব্যাচেলর মেসের ইফতারে কমেছে খাবারের পদ। নানা বাহারি ইফতারের পরির্বতে মাত্র কয়েকটি পদের ইফতারির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে তাদের ইফতার আয়োজন। ছোলা, বেগুনি, পেঁয়াজু আর একটি খেজুর দিয়ে সারছেন ইফতার। থাকে না কোনা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। ফলমূল রাখার চিন্তা করলেও অনিয়ন্ত্রিত মূল্যের কারণে রাখতে পারছে না।
কয়েকজন ব্যাচেলর ছাত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইফতারে শুধু ছোলা-মুড়ি থাকলেও একবারে প্রায় ৭০ টাকা চলে যায়। অন্যান্য পদের ইফতারির কথা চিন্তা করতে পারি না।
সরেজমিন বহদ্দার হাট ও চকবাজার এলাকায় কয়েকটি ইফতারির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বেগুনি, আলু ও ডিমের চপ, পেঁয়াজু, বিভিন্ন শাকের বড়া, রোল, বিফ চপ ও জিলাপির কদর বেশি। প্রতি পিস বেগুনি, আলুর চপ, শাকের বড়া, পেয়াঁজু পাঁচ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি জিলাপি ১০ টাকা ও শাহী জিলাপি ২০ টাকা, প্রতিটি শিঙাড়া ১৫ টাকা, সমুচা ১৫ টাকা, ডিম চপ ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বহদ্দারহাট বাড়াইপাড়া এলাকায় একটা মেসে থাকেন চট্টগ্রাম কলেজের সম্মান ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম। সাত বন্ধু মিলে থাকেন এই মেসে। গতকাল ইফতারের আয়োজন নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, সাত জনের ইফতারিতে প্রায় ৪শ থেকে ৫শ টাকা খরচ হচ্ছে। যদি একটা আপেল বা পেঁয়ারা খেতে চাইলে খরচ আরো বেড়ে যায়। সেহেরিতে একটু ভালো খাবার খেতে চাইলে মিল প্রতি প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হয়।
ফয়সাল আহমেদ নামে একজন বলেন, কয়েকজন বন্ধুরা মিলে বাড়াইপাড়ায় মেসে থাকি। সবাই মিলে একদিন ইফতার করবো বলেই ইফতারি কিনতে এসেছি। কিন্তু সবকিছুর দাম দেখে মনে হচ্ছে এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে। অনেক কিছু কেনার পরিকল্পনা থাকলেও অল্পকিছু কিনেই মেসে ফিরতে হবে।
চকবাজার দেবপাহাড় এলাকায় আরেক মেসে থাকেন শাহাদাত। তিনি জানান, ইফতারির আয়োজন একেবারে ছোট। আলুর চপ, একটি বেগুনি, একটি পেঁয়াজু, একটি খেজুর, এক প্যাকেট মুড়ি, এক বাটি ছোলা, এক গ্লাস শরবত দিয়ে সারছেন ইফতার। রমজানের প্রথমদিন ১১ সদস্যের মেসে প্রতি জন থেকে ২ হাজার করে নিয়ে ১৫ দিনের সেহেরি আর ইফতার কিনেছেন।
আরেক সদস্য মুনতাসির জানায়, মেসের ইফতারি পর্যাপ্ত হয় না। সারাদিন রোজা রেখে সবাই একটু পেটভরে খেতে চায়। কিন্তু দ্রব্যের অতিরিক্ত মূল্যের কারণে ইফতারির আয়োজন ছোট করতে হয়েছে। একটা ফল রাখলে ইফতারের খরচ বেড়ে যায়। গত চারটি রমজানের ইফতারে মাত্র একদিন আপেল আর পেয়ারা ছিল। পর্যাপ্ত ক্যালরি পাওয়া যায় না।