ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে মারধর করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চট্টগ্রামেও ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার নগর পুলিশ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) শ্যামল কান্তি নাথ বলেন, পদ্মা সেতু করতে মানুষের মাথা ও রক্তের প্রয়োজন কোনো স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না। তবু গত কয়েকদিনের ঘটনায় এটা সুস্পষ্ট যে একটি অশুভ চক্র দেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করার জন্য এমন গুজব ছড়াতে তৎপর।
একটি ‘দুষ্টচক্র’ সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন মাইলফলক। এমন কর্মকাÐের সাথে মধ্যযুগীয় কুসংস্কার মিশ্রিত গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশের এ অর্জনকে কলঙ্কিত করতে একটি শক্তি কাজ করছে।
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনায় হতাহতদের এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ছেলেধরা গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে যদি কেউ গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনায় জড়ায় তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে সতর্ক করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
চট্টগ্রামে এ ধরনের দুটি ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান উপ-পুলিশ কমিশনার শ্যামল।
গুজবের বিরুদ্ধে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন থানায় মাইকিং করার পাশাপাশি সামাজিক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চলানো হচ্ছে সিএমপির পক্ষ থেকে। পাশাপাশি বিট, কমিউনিটি পুলিশিং, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে গুজবের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে পুলিশ।
বিভিন্ন এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরও এ নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিলি করে ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিভাবক সমাবেশ ডেকে শিক্ষক-অভিভাবকদের এ ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে সিএমপি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ ছাড়াও সিএমপির কন্ট্রোল রুমের ০৩১-৬৩০৩৭৪ ও ০১৭৬৯১২৩৪৫৬ নম্বরে যোগাযোগ করে যে কোনো তথ্য জানানো যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান, উপ-কমিশনার (বন্দর) হামিদুল হক, উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মিজানুর রহমান, উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা-বন্দর) এসএম মোস্তাইন হোসাইন, উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) আব্দুল ওয়ারিশ, উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) তারেক আহমেদ, উত্তর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মিজানুর রহমানসহ নগর পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন থানার ওসি।
