ছালামের শেষ সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল

92

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের শেষ সময়ে নেওয়া কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিডিএ সম্মেলন কক্ষে ৪৩৬তম বোর্ড সভায় পূর্বের কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাতিল প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের প্রথম বোর্ড সভা ছিলো এটি।
বাতিল করা সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আছে, চলমান প্রকল্প তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন করে আবদুচ ছালামকে যুক্ত রাখা, সিডিএ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ ও সিডিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনার জন্য মনিটরিং কমিটিতে সংযুক্ত রাখা এবং পার্কিংয়ের জন্য হোটেল দি পেনিনসুলাকে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে জায়গা বরাদ্দ দেয়া।
সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষ সময়ে এসে ৪৩৫তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন আবদুচ ছালাম। জহিরুল আলম দোভাষ দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম বোর্ড সভাতেই এসব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হলো। এর ফলে সিডিএতে আবদুচ ছালামের সব কর্তৃত্ব শেষ হলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএ’র এক বোর্ড সদস্য বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম শেষ সময়ে এসে কিছু কার্যক্রমে তাকে যুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সে সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা প্রকল্পে আবদুচ ছালামকে সংযুক্ত রাখা, পেনিনসুলাকে জায়গা বরাদ্দ ও কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে যুক্ত রাখার সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া চলমান প্রকল্পগুলোকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আরো কিভাবে তুলে ধরা যায় সে সম্পর্কেও সভায় আলোচনা হয়েছে। জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।
সিডিএ’র ৪৩৫তম বোর্ড সভায় দায়িত্ব শেষের পরেও সিডিএ’র প্রকল্প তদারিকতে থাকতে মনিটরিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। সে মনিটরিং কমিটিতে বোর্ডের সদস্যদেরও রাখার প্রস্তাব করা হয়। একই সভায় সিডিএ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ ও সিডি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনার জন্য কমিটির বাইরে আরেকটি মনিটরিং কমিটি গঠন করে সেখানে আবদুচ ছালামকে যুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাবগুলো বোর্ডে অনুমোদন লাভ করে। তাছাড়া আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ২৫ থেকে ২৮ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা হোটেল দি পেনিনসুলাকে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও সিডিএ সচিব তাহেরা ফেরদৌসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
সিডিএ’র বোর্ড সদস্য কে এম শাহজাহান বলেন, বোর্ড সভায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবার সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার কথা এসেছে। কিভাবে আরো ভালোভাবে কাজ করা যায় সেটা আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে তা নিয়ে সবাই কথা বলেছেন।
২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক বড় বড় প্রকল্প এনে আলোচিত হন তিনি। তবে ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েন ছালাম। প্রকল্প আনার ক্ষেত্রে সফলতা যেমন আছে তেমনি প্রকল্পে দুর্নীতি ও ব্যর্থতার অভিযোগও আছে।