চ্যালেঞ্জ নিতে ‘ভয় নেই’ নতুন সিইসির

10

পূর্বদেশ ডেস্ক

নানা প্রশ্নে বিদ্ধ দুই নির্বাচন কমিশনের পর নতুন ইসির দায়িত্ব নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পাচ্ছেন না তিনি। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেওয়ার পর রবিবার প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে সিইসি হিসেবে শপথ নিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘মানুষের জীবনটাও চ্যালেঞ্জ, নির্বাচনও একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কোনো চ্যালেঞ্জকে ভয় পেলে হবে না। চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে হবে।’
মুন্সেফ হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর নানা পদ পেরিয়ে সচিব হিসেবে অবসর নেওয়ার পাঁচ বছর বাদে এবার নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পেলেন হাবিবুল আউয়াল।
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আস্থা অর্জনই নতুন ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্বাধীন ইসির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ দল অংশ নেয়নি। এরপর কে এম নূরুল হুদার ইসির সময়ে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দল এলেও ভোটের ফল নিয়ে তুলেছিল প্রশ্ন। সেই দ্ব›দ্ব চলার মধ্যেই দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন হাবিবুল আউয়াল, যার নেতৃত্বে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন হবে।
সাংবিধানিক এ দায়িত্ব সঠিকভাবে, দক্ষতার সঙ্গে, নিরপেক্ষভাবে পালনে সবার সহযোগিতা চেয়ে নতুন সিইসি বলেন, সবার আস্থা অর্জনে নিজেরা যেমন ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবেন, তেমনি সব অংশীজনের মতামত নিয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণ করবেন।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। জাতীয় হোক, স্থানীয় নির্বাচন হোক। চ্যালেঞ্জ যেটা এখনও বুঝে উঠিনি। দায়িত্ব নিলে চারদিকে তাকিয়ে বুঝব আসলে চ্যালেঞ্জ আছে কি না? সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে, সে লক্ষ্যে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, কর্মপন্থা নেব, কৌশল নিরূপণ করব।’
দায়িত্ব যে শুধু ইসির নয়, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একা নির্বাচন করে না। নির্বাচন একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। সবাইকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে। কমিশনও সবার সহযোগিতা আদায় করে নেবে।’ খবর বিডিনিউজের
নতুন সিইসি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সবার অংশগ্রহণমূলক ভোটের প্রত্যাশার কথা একদিন আগেই বলেছেন। সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, আগামী নির্বাচন আমি যে সহকর্মী পেয়েছি ওদের উপর আমার আস্থা আছে। আমার উপর তাদের আস্থা আছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করব।’
ইসিতে দায়িত্ব পালনে সহকর্মী হিসেবে হাবিবুল আউয়াল পাচ্ছেন সাবেক জজ রাশেদা সুলতানা এমিলি, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আহসান হাবীব খান, সাবেক সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।
নতুন সিইসি বলেন, ‘আমরা সমন্বিতভাবে সহকর্মীদের সঙ্গে বসে ঐকমত্য পোষণ করে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা আশা করি, সকলের সহায়তা নিয়ে যারা স্টেকহোল্ডার তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এগোব।’
গতকাল রবিবার শপথ নেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও আজ সোমবার নির্বাচন ভবনে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন তারা।
সিইসি বলেন, ‘আমরা মাত্র শপথ নিয়েছি। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ নিয়েই আমাদের দায়িত্ব আরোপিত হয়ে গেছে। বাস্তব দায়িত্ব কর্মস্থলে গ্রহণ করিনি। আগামীকাল (সোমবার) যাব, আমরা সহকর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করব। ভাবের আদান-প্রদান করব। সংবিধানে, আইনে আমাদের কী কী দায়িত্ব আরোপিত হয়েছে, সেগুলো জানব। ভবিষ্যতে এ দায়িত্ব কীভাবে পালন করব, এ মুহূর্তে বলতে পারব না। আগামীতে আরেকটু ঋদ্ধ হয়ে, লেখাপড়া করে জেনে গণমাধ্যমে কথা বলতে পারব।’