চ্যাম্পিয়নদের গুঁড়িয়ে মধুর প্রতিশোধ নিউজিল্যান্ডের

5

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের সুপার টুয়েলভ পর্বের প্রথম ম্যাচে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৮৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে রেকর্ড গড়েছে নিউজিল্যান্ড। গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই হেরেছিলো নিউজিল্যান্ড। ব্যাটারদের দুর্দান্ত পারফর্মে বড় সংগ্রহ গড়ার পর বাকি কাজটা ছাড়লেন বোলাররা। ২শ রানের ইনিংস গড়ার পর অস্ট্রেলিয়াকে ১১১ রানে গুটিয়ে দিয়ে মধুর প্রতিশোধ নেয় নিউজিল্যান্ড।
দিনের আরেক ম্যাচে ইংল্যান্ডের বাঁ-হাতি পেসার স্যাম কারানের বোলিং তোপে উড়ে গেছে আফগানিস্তান। আগে ব্যাট করতে নামা আফগানদের কারানের রেকর্ড বোলিংয়ে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।
গতকাল সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সকালে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। তবে টসভাগ্য নিজেদের পক্ষে না গেলেও ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে শুরুটা দুর্দান্তই শুরু করে কিউইরা। ১০.১ ওভারেই এক উইকেট হারিয়েই শতরানের ঘর পূরণ করেছে কেন উইলিয়ামের দল।
পাওয়ারপ্লেতেই দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভিড কনওয়ে তুলে নেন ৬৫ রান। ফিন অ্যালেন শুরু থেকেই অজি বোলারদের উপর চড়াও হন। কামিন্স, স্টার্ক কিংবা হ্যাজেলউড সবাইকে সমান তালে পিটিয়েছেন তিনি। তবে ফিফটি করার আগেই দলীয় ৫৬ রানে তাকে হ্যাজেলউডের শিকারে পরিণত হতে হয়। সাজঘরে ফেরার আগে ১৬ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে ৪২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন অ্যালেন।
এই কিউই ওপেনারকে ফিরিয়েও স্বস্তিতে পায়নি স্বাগতিকরা। আরেক ওপেনার ডেভিড কনওয়ে ঝড়ের কবলে পড়েন। ওয়ান ডাউন পজিশনে নামা কেন উইলিয়ামসন অবশ্য একটু ধীরগতিতে খেলছেন। ১৭ বলে তার রান ১৮। উইলিয়ামসন ২৩ রানে আউট হলে, ভাঙে ৬৯ রানের জুটি।
শেষ দিকে জিমি নিশানকে নিয়ে ২৪ বলে ৪৮ রানের জুটি দলের স্কোর দুশোর ঘরে নিয়ে যান কনওয়ে। ৫৮ বলে ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটার। ১৩ বলে ২৬ রানের অপরাজিত ছিলেন নিশাম। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার হ্যাজেলউড ৪ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ৩৯ রানে ১ উইকেট নেন জাম্পা।
২০১ রানের বিরাট টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নারকে ৫ রানে বিদায় করেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি। ওয়ার্নারের পর পাওয়ার-প্লেতে আরও ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ১৩ রানে স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও মিচেল মার্শকে ১৬ রানে বিদায় করেন সাউদি।
৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। এ পরিস্থিতিতে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন স্টয়নিস ও টিম ডেভিড। কিন্তু পরপর দু’ওভারে স্টয়নিস ও ডেভিডকে তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারের মুখে ঠেলে দেন স্যান্টনার। ৬৮ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় অসিরা।
এরপর ১৩তম ওভারে ম্যাথু ওয়েড ও ১৪তম ওভারে গেøন ম্যাক্সওয়েল বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ওয়েড ২ ও ম্যাক্সি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন কামিন্স। শেষদিকে ট্রেন্ট বোল্টের তোপে ১৭ দশমিক ১ ওভারে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
সাউদি ৬ রানে ও স্যান্টনার ৩১ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। বোল্ট ২৪ রানে ২টি শিকার করেন। আর ম্যাচ সেরা হয়েছেন কনওয়ে।
এদিকে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মিশন শুরু করেছে ইংল্যান্ড। তবে ১১২ রানের লক্ষ্যে বেশ ঢিমেতালেই পৌঁছেছে জস বাটলারের দল। মুজিব-নবীদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং বাটলার-মালানদের খোলস ছাড়তে না পারায় ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮.১ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ইংল্যান্ড।
লক্ষ্য ছোট বলেই কিনা, জস বাটলার-অ্যালেক্স হেলসরা শুরু থেকেই করতে পারেননি মারমুখি ব্যাটিং। ফজলহক ফারুকির বলে ব্যক্তিগত ১৮ রানের মাথায় আউট হন ইংলিশ দলপতি বাটলার। তার বিদায়ে ক্রিজে আসা ডেভিড মালান দেখেশুনে খেলতে থাকেন। তবে ৩০ বলে ১৮ রানের ইনিংস নিয়ে এই বাঁহাতি নিজেও হয়তো খুব একটা সন্তুষ্ট নন। হেলস ১৯, বেন স্টোকস ২ এবং হ্যারি ব্রæক সাজঘরে ফেরেন মাত্র ৭ রান করে।
তবে, হার্ড হিটার লিয়াম লিভিংস্টোন দলের জয় নিশ্চিত করার পথে খেলেন ২১ বলে ২৯ রানের ইনিংস। আফগানিস্তানের পক্ষে ফারুকি, মুজিব, রশিদ, নবী ও ফরিদ নিয়েছেন একটি করে উইকেট। উল্লেখ্য, আফগান তিন স্পিনার রশিদ, নবী ও মুজিব- কারোর ইকোনমি রেটই সাড়ে পাঁচের বেশি ছিল না এই ম্যাচে।
এর আগে, স্যাম কারেনের ৫ উইকেট শিকার এবং পুরো ইংল্যান্ড স্কোয়াডের উজ্জীবিত ক্রিকেটে ১৯.৪ ওভারে মাত্র ১১২ রানেই গুড়িয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে টি-টোয়েন্টি প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট শিকার করলেন স্যাম কারেন।
আজকের খেলা-শ্রীলংকা-আয়ারল্যান্ড (সকাল ১০টা), ভারত-পাকিস্তান (দুপুর ২টা)