চোরাই গরু জবাই করে বিক্রি : জানাজানির পর চোর পলাতক

18

ঈদগাঁও প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে গরু চুরি করে সেই গরু জবাই করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে শামসুদ্দীন (৩৬) প্রকাশ শিয়াল্ল্যার বিরুদ্ধে। পরে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে বসতবাড়ি ঘেরাও করার মুহুর্তে কৌশলে পালিয়ে যায় শামসুদ্দীন।
গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব হাজী পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় অভিযুক্ত শিয়াল্ল্যার বাড়ির পাশ থেকে গরুর নাড়িভ‚ড়ি ও রক্তসহ নানা আলামত দেখতে পাওয়া যায় বলে জানান ইউপি মেম্বার আবদুল আওয়াল।
তবে অভিযুক্ত শামসুদ্দীন এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় দাবি করে বলেন, এলাকার কতিপয় মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি নিজেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উল্লেখ করে জানান, মূলতঃ দু’টি গরু আমি ঈদগাঁও বাজার থেকে গত ২১ জুন রশিদ মূলে কিনেছি যার নাম্বার যথাক্রমে ২৭৭৫-২৭৭৮। এরমধ্যে একটি গরু শুক্রবার সকালে জবাই করে বিয়ে বাড়িতে সরবরাহ করেছি। অপরদিকে স্থানীয় মেম্বারদের ইন্ধনে ঐ রাতে আমার বসতবাড়ির ঘেরাবেড়া ভাঙচুর করে ক্রয়কৃত একটি গরু ছিনিয়ে নিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ব হাজীপাড়া গ্রামের শামসুদ্দীন প্রকাশ শিয়াল্ল্যা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরি করে তার বাড়িতে মজুদ করে আসছিল। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের টনক নড়ে। গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে চোরাই গরু জবাই করে মাংস ভাগবাটোয়ারার খবর পেয়ে এলাকাবাসী অভিযুক্তের বসতবাড়ী ঘেরাও করে। এসময় তিনি পালিয়ে গেলেও পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে যায় গরুর নাড়িভ‚ড়ি, প্লাস্টিকের তেরপালসহ নানা সরঞ্জাম।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল আওয়াল ও ছৈয়দ হোছনকে জানানো হলে উভয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, শিয়াল্ল্যাসহ একটি বিশাল সিন্ডিকেট গরু চুরির সাথে জড়িত। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই গরু নিয়ে এসে এলাকায় বিক্রি করে বলে জানতে পেরেছি। তার এসব অপকর্ম থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। আশাকরি প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শামসুদ্দিন বলেন, রাতে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তারা একটি গরু ছিনিয়ে নিয়ে উল্টো আমাকে গরু চোর আখ্যা দিচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম এসব গরু যদি চোরাই গরু বলে কেউ প্রমাণ দিতে পারে সমস্ত ক্ষতিপূরণ ও শাস্তি মেনে নিবো। চোরাই গরুর তকমা দিয়ে যারা আমার গরু লুট ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।
খবর পেয়ে একইদিন বিকেলে চকরিয়া থানা পুলিশ খুটাখালীতে গিয়ে গরু জবাইয়ের সত্যতা পায়। এসময় পুলিশ জড়িত সিন্ডিকেটের পরিচয় দ্রুত সময়ের মধ্যে থানায় প্রদানের জন্য মেম্বার-চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন।
চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইস্রাফিল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের পাইনি। তারা মাংস নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং তার আত্মীয়-স্বজনকে আজকে দিনের মধ্যে জড়িতদের হাজির করার মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।