কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। র্যাবের এনকাউন্টারে নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ী জাপ্পোর সাথে উপজেলা চেয়ারম্যানের সখ্যতার বিষয়টি সবচে বেশি আলোচিত হয়। ইয়াবা ব্যবসায়ী জাপ্পোর সাথে সংশ্লিষ্টতাসহ নানা অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্বেমলনের আয়োজন করেন কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী। গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কর্ণফুলী শিকলবাহা ক্রসিংস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। সম্মেলনে লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে তিনি বলেন, নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাফর প্রকাশ জাপ্পোর সাথে তার কোন ধরনের পরিচয় ও যোগাযোগ ছিল না। এরপরও জাপ্পোকে তার সহযোগী হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছেন একটি গ্রূপ। বক্তব্যে জাপ্পোর সাথে সখ্যতার বিষয়টি অস্বীকার করলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি স্বীকার করেন নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ী জাফরকে তিনি চিনতেন এবং সখ্যতা ছিল। তবে জাফর ইয়াবা ব্যবসা করতেন কি-না সে সময় (জাফর নিহত হওয়ার আগে) তিনি জানতেন না। এলাকার লোকজন ও সংবাদ কর্মীদের কাছে জাপ্পোর ইয়াবা ব্যবসার ব্যাপারে জানার পর এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে নিহত জাফর তার ছেলের মাথায় হাত রেখে শপথ করে বলেছিল সে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। পুত্রের মাথায় হাত দিয়ে শপথ করায় স্থানীয় লোকজন এবং সংবাদকর্মীদের কথা বিশ্বাস করেননি। পরে র্যাবের সাথে এনকাউন্টারে জাফর নিহতের মধ্য দিয়ে প্রমাণ পেয়েছেন সে আসলেই ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলেন। গত বুধবার কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ক্রসিং এলাকায় একটি কমিউনিটি সেণ্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলোচনায় উঠে আসে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান থেকে মালামাল ক্রয়ের। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সম্মেলনে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মালামাল ক্রয়ের বিষয়টি তার অজান্তে ঘটেছে। এর বাইরে গত দুই বছরে কোনো ধরনের দোষত্রূটি কেউ দেখাতে পারবেন না। কমিউনিটি সেণ্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও তাতে কৌতূহলী কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত হন। সম্মেলনে প্রশ্নউত্তর পর্বে নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ীর জাপ্পার বিষয়টি সবচে বেশি আয়োচিত হয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জাপ্পোর সাথে তার কোন ধরনের যোগাযোগ ও পরিচয় না থাকার তথ্য দিলেও প্রশ্নের মুখে সখ্যতা থাকার কথা স্বীকার করে নেয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হন। সংবাদ সম্মেলনের পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় এখনো তোলপাড় চলছে।
লিখিত বক্তব্যে ফারুক চৌধুরী বলেন, দলের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি পক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্র পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে। কোন ধরনের মিথ্যা তথ্য পেলে তা যাছাই বাছাই করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে এর সবই একটি গ্রূপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকশ নেতা কর্মীর উপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, সেখানে কোন কর্মীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় নি। মুখে মুখে শোনেই নেতা ও কর্মীরা সংবাদ সম্মেলনস্থলে জড়ো হয়েছেন। যারা তার বিরুদ্ধে অপ্রচার ছড়াচ্ছে তারা কারা এবং তাদের সাথে সমন্ময় করতে না পারা ব্যর্থতা কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি চেষ্টা করেছেন সকলের সাথে সমন্ময় করতে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি ছাড়াও নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রকল্পে সম্পৃক্ত করতে গিয়ে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।