চুনতি আশ্রয়ন প্রকল্পের বসতঘর পুড়ে ছাই

61

লোহাগাড়ায় এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে চুনতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত ১৮ এপ্রিল উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডস্থ আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন বাবর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন- আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মৃত নূর আহমদের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন, মৃত ইব্রাহিমের পুত্র মো. শাহ আলম, নুরুল কাদেরের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, মৃত মো. কাশেমের পুত্র আবুল বশর, মৃত ছরওয়ারের স্ত্রী আয়েশা বেগম, মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী মাবিয়া বেগম, মৃত লালমিয়ার পুত্র ফরিদুল আলম প্রকাশ বৈদ্য ফরিদ, মৃত মোজাহের আহমদের পুত্র আবু তাহের, মৃত নজু মিয়ার পুত্র আবুল কালাম ও মৃত আব্দুস ছালামের পুত্র আব্দুল আমিন। অগ্নিকান্ডে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ আনুমানিক ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। স্থানীয়রা জানান, ফরিদুল আলমের বাড়ির রান্না ঘরের গ্যাসের চূলা থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়ে মুহুর্তের মধ্যেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আশ-পাশের পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় আগুন নিভাতে অনেক সময় লেগেছে। ততক্ষণে ১০টি বসতঘরের প্রায়সব মালামাল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত মাহমুদা খাতুন বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করছি। সারা জীবনের সঞ্চিত সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। মৃত ছরওয়ারের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, ছেলেকে ইটভাটায় কাজে পাঠিয়ে ২০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। আগুনে আমার বাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই করে ফেলেছে। টাকাটাও রক্ষা করতে পারলামনা। ক্ষতিগ্রস্ত আবুল কালাম বলেন, আমার বসতঘরের ফ্রিজ, আসবাবপত্র, কিস্তির জন্য রাখা নগদ সাড়ে ৫ হাজার টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সবকিছু আগুণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত আবু তাহের বলেন, রমজানে খরচের জন্য অনেক কষ্টে ২২ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। জমানো সব টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত আনোয়ারা জানান, বাড়িতে কাপড় সেলাই করে অনেক কষ্টে সংসার চালায়। ঈদ উপলক্ষে সেলাই করে বিক্রির জন্য চুনতি বাজারের টুনু সওদাগর থেকে বাকি করে ২৫ হাজার টাকার কাপড় এনেছিলাম। আগুনে সব কাপড় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এদিকে, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিনসহ ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। ততক্ষণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১নং কলোনির ১০ বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয় চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন জনু বলেন, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাৎক্ষণিকভাবে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি এবং প্রাথমিকভাবে বসবাসের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।