চিতা কেন এত দ্রুত দৌড়ায়? কারণ জানালেন বিজ্ঞানীরা

6

চিতার মতো প্রাণীর দ্রুতগতিতে দৌড়ানোর পেছনের কারণ প্রকাশ পেয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ প্রকাশিত নতুন এ গবেষণা বলছে, যেসব প্রাণী দ্রুত দৌড়াতে পারে, এরা মূলত মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’-এর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও এ গবেষণার প্রধান লেখক ড. ডেভিড ল্যাবন্তে বলেছেন, দ্রুততম প্রাণীরা বড় হাতি বা ছোট পিঁপড়ার মতো নয়, বরং এরা চিতার মতো
মাঝামাঝি আকারের হয়ে থাকে। তবে এদের দৌড়ানোর গতি প্রচলিত প্যাটার্ন কীভাবে ভাঙে বা এতে প্রাণীর শারীরিক কার্যকারিতা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেটাই বড় প্রশ্ন।
এ ধরনের প্রাণীগুলোর পেশী মাটিতে কীভাবে কাজ করে ও তারা কতো দ্রুত দৌড়াতে পারে, সে বিষয়গুলো মূল্যায়নে একটি নতুন নমুনা মডেল বানিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা দলটি। খবর বিডিনিউজের
গবেষণায বলা হয়, প্রাণীরা কত দ্রুত দৌড়াতে পারবে, তার দুটি সীমারেখা আছে। এর মধ্যে প্রথমটি ‘কাইনেটিক এনার্জি ক্যাপাসিটি লিমিট’ নামে পরিচিত। এতে দেখা যায়, ছোট আকারের প্রাণীদের পেশী কত দ্রুত সংকুচিত হয়, তা নির্ভর করে পেশীগুলোর টানের মাত্রার ওপর। দ্বিতীয়টি হল ‘ওয়ার্ক ক্যাপাসিটি লিমিট,’ যার মানে, বড় প্রাণীদের পেশী কতোটা সংকুচিত হতে পারে। ‘ইউনিভার্সিটি অফ সানশাইন কোস্ট’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড’-এর অধ্যাপক এবং এ গবেষণার সহ-লেখক ক্রিস্টোফার ক্লেমেন্ট বলেছেন, ‘চিতা আকারের প্রাণীদের দৈহিক ওজন ৫০ কেজি’র আশপাশে হতে হয়, যেখানে এই সীমা দুটি’র মেলবন্ধন ঘটে। ফলে, প্রাণীগুলো দ্রুতগতির হওয়ার পাশাপাশি এরা ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ মাইল (১০৪ কিলোমিটার) পর্যন্ত গতি অর্জন করতে পারে।
কীভাবে কয়েকটি শ্রেণীর প্রাণী অন্যদের চেয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারে, তার জবাব মিলবে গবেষকদের এই মডেলে। পাশাপাশি কিছু প্রাণীর পেশী কীভাবে বিকশিত হয়েছে, তাও নির্ধারণ করা যায় এর মাধ্যমে। এ ছাড়াও, কয়েকটি নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রাণীতে কেন বিশাল পার্থক্য রয়েছে তার’ ও ধারণা মেলে এর মাধ্যমে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, কুমিরের মতো বড় সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীরা কেন বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের চেয়ে ধীরগতির হয়, সে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে এ গবেষণায়।