চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত রাঙামাটির কিল্লামুড়ার জনসাধারণ

58

রাঙামাটি সদর উপজেলা বালুখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কিল্লামুড়া এলাকার মানুষরা চিকিৎসা সেবার অভাবে নানা রোগে ভুগলে সরকারি চিকিৎসকের দেখা পান কালেভদ্রে। এতে সবচেয়ে সঙ্কটে পড়ে প্রসূতি ও গর্ভবতী নারীরা। এজন্য স্থানীয়দের দাবি একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক। জেলা সদরের বালুখালী ইউনিয়নের কিল্লামুড়া একটি প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া বিচ্ছিন্ন দুর্গম এলাকা। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌ-পথ। সদর উপজেলা হতে কিল্লামুড়ার দূরত্ব প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার। কিল্লামুড়া প্রায় ৬-৭ সম্প্রদায়ের বসবাস। কিল্লামুড়া তিনটি পাড়া রয়েছে- কিল্লামুড়া, কার্ব্বারী পাড়া ও মধ্যম পাড়া। এখানে ত্রিপুরা, চাকমা, বড়–য়া, হিন্দু ও বাঙালিসহ ৬-৭ সম্প্রদায়ের লোক মিলেমিশে বসবাস করছেন।
স্থানীয়রা জানান, তাদের বড় সমস্যা হলো চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা। এই এলাকায় প্রতি বছর ডেলিভারি করার সময় ২-১টি বাচ্চা মারা যায়। তাই তাদের দাবি প্রসূতি সেবা এবং ডেলিভারি করার জন্য একটি ক্লিনিক সরকারিভাবে স্থাপন করা হোক। যদি তা করা হয় এই এলাকার লোকজন স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাবে।
১১৬নং রাঙামাটি সদর মৌজার মহিলা কার্ব্বারী নিরমলা ও বালুখালী ইউপির ২নং ওয়ার্ডের সদস্য বিপ্লব ত্রিপুরা বলেন, নারী ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। এখানে ২-৩মাস পর পর সদর উপজেলা হতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী আসে তবে বেশ কিছু দিন ধরে কাউকে আসতে দেখছি না। এভাবেই চলছে কিল্লামুড়ার স্বাস্থ্য সেবা। কিল্লামুড়া এলাকায় সরকার যদি স্থায়ী ভাবে একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক স্থাপন করে তাহলে উপকৃত হবেন প্রায় ২হাজার লোক। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যাপারে আমরা মৌখিক ভাবে ২-১ বার জেলা পরিষদসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবগত করেছি। ডেলিভারিজনিত মা বোন নিয়ে চলে যেতে হয় সদর উপজেলাতে। নদী পথে রোগি নিয়ে যাওয়া যে কত কষ্ট, তা বিপদে না পড়লে বোঝানো যাবেনা। যদি সবাই জানে এটি সদর উপজেলার মধ্যে কিন্তু কিল্লামুড়া আসলে একটি দুর্গম এলাকা।
রিনা ত্রিপুরা বলেন, গত ৩-৪ বছর আগে চিকিৎসার অভাবে তার নবজাতক ২টি শিশু মারা গিয়েছে। একটির নাম অনন্যা ত্রিপুরা ও বেবী ত্রিপুরা। এছাড়াও ডেলিভারিজনিত কারণে তার বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনের শিশু মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। একই সমস্যার কথা জানালেন- অনামিকা ত্রিপুরা,পাপড়ি ত্রিপুরা ও রুনা ত্রিপুরা। তারা বলেন, আমরা অন্যান্য সমস্যার চেয়ে বেশি সমস্যায় আছি নারী শিশু ও নবজাতক শিশুর চিকিৎসা সেবা। তাদের দাবি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এই এলাকায় একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক নির্মিত করা অতিব জরুরি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সির্ভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলেন,ওই এলাকটি দুর্গম বটে তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা নিয়মিত যাওয়ার কথা। এছাড়াও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। আশা করছি অচিরেই এই সংকট নিরসন হয়ে যাবে। কিল্লামুড়ায় স্থায়ী একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে।