চাল ও মাছ-মাংসের দাম কমেনি

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র রমজান আসতে বাকি মাত্র আর দুই মাস। এতেই দিন দিন চড়া হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় শুধু নিম্নবিত্ত নয়, দুর্বিসহ হয়ে উঠছে মধ্যবিত্তের জীবনও। চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, জিরা, রসুন, মরিচ, আদা, হলুদ, দারুচিনি, লবঙ্গ, ডিম সবকিছুরই দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অসহায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত। ভোক্তারা বলছেন, এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকলে, রমজান মাসে পণ্য কেনা কঠিন হয়ে পড়বে।
গতকাল শুক্রবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে হাঁসের ডিম ডজন ২০০ টাকা ছাড়ালেও লেয়ার মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১৮ থেকে ১২০ টাকা।
এদিকে হুট করেই নগরীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে আদা ও রসুনের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ টাকার চায়না আদা দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা চায়না আদা কেজিপ্রতি বিক্রি করছেন ২২০ টাকা। অন্যদিকে রসুনের কেজি ১৭০ টাকা ছাড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রিয়াজউদ্দিন বাজারে কাঁচামালের আড়তদার মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘বাজারে আদা ও রসুনের যোগান কম। আমি পার্শ¦বর্তী দোকান থেকে এনে বিক্রি করছি। ডলার সংকট ও এলসি খুলতে পারছি না। মায়ানমারের আদাও বাজারে নেই।’
তাছাড়া শীতকালীন সবজি প্রায় প্রত্যেকটিতেই কেজিপ্রতি ১০ টাকার বেশি বেড়েছে। কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ১২০ টাকা ছাড়িয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০ টাকার নিচে নেই কোনো মাছ। ৮৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস। কেজি এক হাজার টাকার উপরে খাসির মাংস। গত কয়েক সপ্তাহ সবজির দাম কিছুটা ক্রেতাদের নাগালে থাকলেও গতকাল থেকে আবারও বেড়েছে সবজির দাম।
তাছাড়া, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। লেয়ার ও সোনালি মুরগির কেজি ২৫০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছ বাজারও কিছুটা বাড়তি। সাগরের মাছের পর্যাপ্ত যোগান থাকলেও কমছে না দাম। পাবদা ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, পোয়া ৩০০ টাকা, চিতল ৪০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কোরাল (সাইজভেদে) ৩২০ থেকে ৮০০ টাকা, বাটা মাছ ৩২০ থেকে ৬০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৮৫০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৫৮০ থেকে ৭৫০ টাকা, শোল ৫৫০ টাকা, টাকি ৪০০ টাকা, শিং ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী শিবচন্দ্র দাস বলেন, শীতকালে জেলেরা সাধারণত মাছ ধরতে কম যায়। বাজারে মাছের যোগানও কম। যার কারণে দাম বাড়ছে। হোটেলগুলোতেই বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে। খুব কম সংখ্যক সাধারণ মানুষ মাছ কিনছে। অতিরিক্ত দাম নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।
টমেটো ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, তিতা করলা ১০০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, নতুন আলু ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লাউ কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
ক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, ‘দিন দিন দাম বাড়লে আমরা খাবো কি? রোজা আসতে দুই মাস বাকি, এতে যদি এমন অবস্থা হয় তবে রোজা আসলে কি হবে? এ নিয়ে সরকারের দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।’