চালের দাম বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে, অভিযোগ সুজনের

12

 

পরিকল্পিতভাবে চালের দাম বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। ২১ মে সকালে পাহাড়তলি বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ অভিযোগ করেন সুজন।
মতবিনিময়ের প্রারম্ভে পাহাড়তলি বাজারের চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে চালের দাম বৃদ্ধির বিবরণ সুজনের নিকট উপস্থাপন করেন। তারা কিভাবে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায় সে বিষয়ে প্রস্তাবনা পেশ করেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গের চালের মোকামরা এদিন সকালে তাদের প্রতিনিধিদের চাল বিক্রি না করার নির্দেশনা প্রদান করেন। এতে করে চালের বাজারে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। নেতৃবৃন্দ সুজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগের অনুরোধ জানান। এসময় সুজন বলেন, কোন কারণ ছাড়াই চালের দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে কৃষকের ঘরে বোরো এবং ইরি মৌসুমের ধান উঠেছে। এমন ভরা মৌসুমে কি কারণে চালের দাম বাড়ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি উত্তরবঙ্গের চালের মোকাম থেকেই চালের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়া বড় মিল মালিকের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পগ্রুপ চাল মজুত করার কাজে নেমেছে। শিল্পগ্রুপগুলো পণ্য উৎপাদনের দিকে না ঝুঁকে বর্তমানে চালসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তারা অগ্রিম দাঁদন দিয়ে উৎপাদিত ধান, চাল তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। ফলত গত দুইদিনে ৫০ কেজি প্রতি বস্তা চালের দাম ৩০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা চালের সংকট হবে মর্মে গুজব সৃষ্টি করে চালের মজুত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আবার চালের দাম বাড়লে কৃষকের উপকার হবে বলে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার পাঁয়তারাতে লিপ্ত রয়েছে। মূলত চালের দাম বৃদ্ধির পুরো টাকাটাই চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। আর কষ্ট ভোগ করছে সাধারণ ক্রেতাগণ। এরা একেক সময় একেক গুজব সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে। সম্প্রতি তেল, আটা, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে এসব অসাধু ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট। আমরা মনে করি অনেকটা পরিকল্পিতভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র করছে ঐ শিল্পগ্রুপ সিন্ডিকেটটি। এদের মধ্যে কিছু শিল্পগ্রুপ অতীতে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল। তারা কৌশলে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এরা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সরকারের প্রতি আহব্বান জানান তিনি।
পরে তিনি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন আড়তদারদের কাছে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে সহযোগিতা চান। বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এসময় চালসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সকল প্রকার সহযোগিতার ঘোষণা দেন। অন্যান্যদের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নুরুল আমিন, পাহাড়তলি বণিক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, ওয়ার্ড আওয়ামী লিগের যুগ্ম-আহবায়ক লায়ন এম শওকত আলি, হাজী মো. হোসেন, বণিত সমিতির সহ-সভাপতি রহমত উল্ল্যা, জাফর আলম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এস এম সোহেল, কোষাধ্যক্ষ দিদারুল হক, যুবনেতা সমীর মহাজন লিটন, মুনছুরুল হক, মো. শাহজাহান, মো. নাছির খাঁন, ফিরোজ শাহ, জাবেদ আলি, নুরুল ইসলাম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি