চাক্তাই খালে ৬৫ স্থাপনা উচ্ছেদ

14

জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরীর চাক্তাই খালের ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ দখলের মাধ্যমে চাক্তাই খাল প্রায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় নগরীর বড় অংশ বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
এ নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনার পর গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে চাক্তাই খালের বহদ্দারহাট অংশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এই অভিযান শুরু করেছে। প্রথমদিনের অভিযানে ৬৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিডিএ কর্মকর্তারা।
সিডিএতে দায়িত্বরত স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল আলম চৌধুরী এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
সিডিএর সহকারী প্রকৌশলী হামিদুল হক জানিয়েছেন, চাক্তাইখালে ১৩২টি অবৈধ স্থাপনা আছে। এরমধ্যে ১৭টি বহুতল ভবন, ৬৭টি টিনশেড ও ৪৮টি কাঁচা ঘর।
প্রথমদিন চাক্তাইখালের চারটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। চাক্তাই খালের বহদ্দারহাট, বাড়ইপাড়া, সিরাজদ্দৌলা রোডের মাছুয়া ঝর্ণা ও সাবেরিয়া সেতু এলাকা থেকে ৬০ থেকে ৬৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। খালের আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার অংশে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে বহুতল ও কাঁচা-পাকা ঘর রয়েছে। সকাল ১১টায় শুরু হওয়া অভিযান চলে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। এর আগে রাজাখালী খাল থেকে ২৬টি অবৈধ স্থাপনা ও নোয়াখাল থেকে ১৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে একনেকে পাশ হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তত্ত¡াবধানে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম।
খালের ওপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ শুরু হয়েছে গত ২ জুলাই। নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে ১৩টি খালের ওপর ১ হাজার ৫৭৬টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে অভিযানে নেমেছে সিডিএ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি খাল থেকে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রমও শুরু হয়।
ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।