চাকমা ভাষার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নুও স্ববন’

58

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বিজু’ উপলক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে সম্পূর্ণ চাকমা ভাষা ও সংস্কৃতির স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র (আরসিআই মুভি) ‘নুও স্ববন’। বাংলায় যার অর্থ ‘নতুন স্বপ্ন’। পাহাড়িদের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ‘রাঙামাটি কালচারাল ইনস্টিটিউশন (আরসিআই) বিজু-২০২১ উপলক্ষ্যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছে। আজ (রোববার) বিকাল ৪টায় উদ্বোধনীর মধ্য দিয়ে আরসিআই পরিচালিত ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে আনুষ্ঠানিক প্রচার করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ কথা বলা হয়েছে।
নুও স্ববন চলচ্চিত্রের কাহিনী সংক্ষেপ: ঘিলাছড়ি একটি প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম। সেখানে বসবাস চাকমা সম্প্রদায় লোকজনের। দেবোত্তম তালুকদারের পরিবার সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সম্ভ্রান্ত। তাদের অহংকার ও দাম্ভিকতায় অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ। অন্যদিকে বনরাজ চাকমার পারিবারিক ও আর্থিক অবস্থা একেবারে দারিদ্র্য সীমার নিচে। তবু কঠিন অবস্থার মধ্যেও মেয়ে সন্তান হৃদ্ধিতার পড়ালেখা নিয়ে অবিচল দায়িত্বশীল বনরাজ ও তার স্ত্রী শাখা। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু। বিজু চাকমা সামাজিক অনুষ্ঠান। যার যা সামর্থ্য- তা নিয়ে উৎসবটির আয়োজন করে ঘিলাছড়ির মানুষজন। উৎসবটিকে ঘিরে গল্পের কাহিনী মূলত বনরাজ চাকমা এবং দেবোত্তম তালুকদার- এ দুটি পরিবারকে কেন্দ্র করে।
বিজুর গল্প ‘নুও স্ববন (নতুন স্বপ্ন)’ মূলত গড়ে উঠেছে ঘিলাছড়ি গ্রামের যুবক-যুবতীদের উৎসব ঘিরে। যাতে রয়েছে প্রেম ভালোবাসার স্বপ্নজাল। দেবোত্তম তালুকদারের মেয়ে রিলাক্সি তালুকদার পেতে চায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের ছেলে প্রাচুর্য্য চাকমাকে। কিন্তু প্রাচুর্য্যরে ভালোবাসার স্বপ্নজাল তৈরি হয় দরিদ্র কৃষক বনরাজ চাকমার মেয়ে হৃদ্ধিতাকে নিয়ে। অন্যদিকে ঘিলাছড়ি গ্রামের বখাটে যুবক হুদুক্কে চাকমা পেতে চায় হৃদ্ধিতাকে। হুদুক্কে এবং তার সহযোগী ব্যাঙ পেদা ও বিজি মুও উত্যক্ত করে হৃদ্ধিতা আর তার বান্ধবী যামিনীকে। এই ঘটনা বিজু উৎসবের আন্দকে ম্লান করে দেয়। এতে অতিষ্ঠ হৃদ্ধিতা ও যামিনী। শেষে উৎসবের মধ্যেই শাস্তি পেতে হয় তিন বখাটে যুবককে।
এভাবে গড়ে উঠেছে সম্পূর্ণ চাকমা ভাষা ও সংস্কৃতির স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নুও স্ববন’এর কাহিনী। ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে রয়েছে- বিজু উৎসব পালন, জটিলতা, দ্বন্দ্ব, সংঘাত, মারামারি, হাসি-কান্না আর আনন্দ-বেদনাসহ সমাজের টুকিটাকি অনেক বিষয়। রয়েছে নতুন দিনের নতুন স্বপ্ন। ‘নুও স্ববন’ চলচ্চিত্রটির কাহিনী, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছেন সুশীল প্রসাদ চাকমা। প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে নির্মাতা রাঙামাটি কালচারাল ইনস্টিটিউশন (আরসিআই)।
অভিনয় করেছেন- সুইটি চাকমা, সন্তু মনি চাকমা, মমতা চাকমা, সচিব চাকমা নবীন, টিটন চাকমা, যুগান্তর চাকমা, নিপি চাকমা, মনিষা চাকমা, মিলন চাকমা, বিশাখা চাকমা, প্রথমা চাকমা, রিকা চাকমা, শর্মিতা চাকমা ও সুশীল প্রসাদ চাকমাসহ আরও অনেকে।