চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির সাহিত্য আসর ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

41

হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। সকালের সুর্য্যিটা প্রতিদিনের মতো সুনীল আকাশের কোলে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়েছে। দিগন্তের অপরূপ মায়াবীময় সৌন্দর্যে ভরপুর চুয়েট সংলগ্ন আলোকাধম্মা বৌদ্ধ বিহার। তখন ঘড়ির কাটা বিকেল ৩টার ঘরে স্থির হাঠৎ মাইক্রোফোনে শব্দ তরঙ্গে বাতাসে ভেসে উঠলো বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে সৃজনশীল শিশু কিশোর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সেবী সংগঠন চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির অনুষ্ঠান। এই উপলক্ষে আয়োজিত গত ২২ নভেম্বর, শুক্রবার রাউজান উপজেলাধীন চুয়েট সংলগ্ন আলোকা ধম্মা বৌদ্ধ বিহারে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের মধ্যেছিল এ সংগঠনের ৬৭ তম সাহিত্য আসর। চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক ও শিশু সাহিত্যিক সমীরণ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন চিকিৎসক ও কবি ডাঃ পরিতোষ বড়ুয়া। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেল জর্জকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সংস্কৃতিসেবী এডভোকেট রনজিত চৌধুরী। এতে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আলোকাধম্মা বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ও সাহিত্যিক ভদন্ত পঞ্ঞাজীবা ভিক্ষু। প্রধান আলোচক ছিলেন শিশু সাহিত্যিক, ও সাপ্তাহিক স্লোগান পত্রিকার বার্তা ও সাহিত্য সম্পাদক, সাংবাদিক ও গল্পকার ইফতেখার মারুফ। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ বাবু সুধীর রঞ্জন বনিক, প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কবি বাদল বড়ুয়া, ব্যাংকার ও লেখক ধীমান বড়ুয়া, শিশু সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ কাঞ্চন চক্রবর্তী, কবি ও গীতিকার তসলিম রায়হান, সাংবাদিক ও লেখক সি আর বড়ুয়া বিধান, লেখিকা রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গান “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর” এই উদ্বোধনী সংগীতটি পরিবেশন করেন শিল্পী ও ব্যাংকার ধীমান বড়ুয়া, দীঘি বড়ুয়া, নিলয় বড়ুয়া, ইমন বড়ুয়া। সূচনা বক্তব্য রাখেন চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক সমীরণ বড়ুয়া, স্বাগত ভাষন প্রদান করেন চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা লেখক ও শিক্ষক প্রদীপ বড়ুয়া। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা স্বপন আচার্য্য, শিক্ষাবিদ ও কবি বাদল বড়ুয়া, লেখক সি আর বিধান বড়ুয়া, প্রমুখ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে স্বরচিত ছাড়া, কবিতা, আবৃত্তি, গল্প ও প্রবন্ধ পাঠ করেন যথাক্রমে নবীন লেখক সৌরভ বড়ুয়া, শিপলু বাড়ুয়া, তসলিম রায়হান কবি ও লেখক ডাঃ পরিতোষ বড়ুয়া, ধীমান বড়ুয়া, রেবেকা সুলতানা, বাদল বড়ুয়া, সমীরণ বড়ুয়া, স্বপন আচার্য্য, কাঞ্চন চক্রবর্তী, প্রমুখ। অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে দেশত্মবোধক রবীন্দ্র, নজরুল, পল্লীগীতি ও আধুনিক গান পরিবেশন করেন- শিল্পী ইমন বড়ুয়া, ধীমান বড়ুয়া, নিলয় বড়ুয়া, রিমন চাকমা, নমিতা বড়ুয়া, দীঘি বড়ুয়া। এতে শিশু শিল্পী দীঘি বড়ুয়ার পরিবেশিত “হে ক্ষনিকের অতিথি এলো প্রভাতে”, শিল্পী ইমন বড়ুয়ার পরিবেশিত “আমি চিনিগো চিনি তোমারে, ও গো বিদেশীনি”, ও “কেন চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেন না, শুকনো ধুলো যত” এ রবীন্দ্র সংগীত গুলো খুবই চমৎকার গেয়েছেন। এছাড়াও গীতিকার ও সুরকার সমীরণ বড়ুয়ার পরিবেশিত “রাউজানেরই মাটির বুকে দুর্নীতিকে দাড়াও রুখে উন্নয়নের বইছে জোয়ার, দেখবি তোরা আয়। গোলাপি রঙ ছড়িয়ে দিলো ফজলে করিম ভাই” এ গান গুলো উপস্থিত দর্শক স্রোতাদেরকে বিমুগ্ধ করেছে। এছাড়াও অধিকাংশ শিল্পীরা নবীন হলেও তাদের পরিবেশিত গানে সম্ভাবনার ইঙ্গিত পরিলক্ষিত হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ ২১ বছর পরে তাদের অগ্রযাত্রা আবার শুরু হয়েছে। এ অগ্রযাত্রা যাতে থেমে না যায় এই বিষয়ে সকলকে এগিয়ে আসার জন্য বক্তারা আহব্বান জানান। সাধরণত শহরে বিনোদনের জন্য অনেক ক্ষেত্র থাকলেও গ্রামীণ জনপদে এ রকম সাহিত্য আসর ও সৃজনশীল সংগীতানুষ্ঠান খুব কমই দেখা যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন সমীরণ বড়ুয়া। পরিশেষে- চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগামীতে আরো নতুন নতুন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা করছি।