চবি ছাত্রলীগের ৪ ঘণ্টার সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চিকা নিয়েই যত ঝামেলা

16

চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) গত শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের দুই উপ-গ্রুুপ ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) ও বিজয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। রাত ১০টা থেকে এএফ রহমান হলে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে চলা চার ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে একটি হলের প্রায় ৩০টি কক্ষ।
জানা গেছে, দেয়ালে এক গ্রুপের চিকা, অন্য গ্রুপ মুছে দিয়েছে। এ নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বিশ্ববিদ্যালয়ের এএফ রহমান হলের দেয়ালজুড়ে ছিলো বিজয় গ্রুপের চিকা। তার মাঝে ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিজেদের গ্রুপের চিকা মারলে তা মুছে দেয় বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। গত শুক্রবার দিনভর এ নিয়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরে রাতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ সময় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ছাড়াও শোনা গেছে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ, দেখা গেছে অস্ত্রের মহড়া। ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর এবং দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা হত্যার হুমকি দেন বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে এএফ রহমান হল দখলে নেয় ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা। রাত ১২টার পর বিজয় গ্রæপের নেতাকর্মীরা পাল্টা আক্রমণ করে এএফ রহমান হল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। রাত দুইটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগামী ৭ নভেম্বর এ বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়েই প্রক্টরিয়াল বডি বৈঠকে বসবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সে পর্যন্ত প্রত্যেকেই যার যার হলে অবস্থান করবে।
এদিকে সংঘর্ষকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভ‚মিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টানা ৪ ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়নি।
তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। সহকারী প্রক্টররা ঘটনাস্থলে সাথে সাথেই উপস্থিত হন। কিন্তু আমরা যখন এক পক্ষের সাথে এর সমাধান নিয়ে কথা বলছিলাম, তখন অন্যপক্ষ পেছন থেকে হলে আক্রমণ করেছে। তাই আমাদের কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় বিদ্যমান দুটি পক্ষই একে অপরকে দুষছেন। বিজয় গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক বলেন, আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই ভিএক্সের ছেলেরা আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছে।
অপরদিকে ভিএক্স গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মারুফ ইসলাম বলেন, আমরা এএফ রহমান হলে আমাদের কর্মীদের নিয়ে মিটিং করছিলাম। এসময় বিজয়ের ছেলেরা আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ ঘটনায় এএফ রহমান হলের সব ধরনের চিকা মুছে ফেলা ও হল ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, চিকা নিয়েই যেহেতু ঝামেলা হয়েছে, সেহেতু এএফ রহমান হলের সব ধরনের চিকা মুছে ফেলা হবে। এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য হলেও চিকা মুছে ফেলার কাজ শুরু হবে। এছাড়া যারা হল ভাঙচুর ও হলের সম্পদ নষ্ট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।