চবির আবাসিক হলে তালা দিয়ে বিক্ষোভ

17

বিদ্যুৎ, পানি, আসবাবপত্র সংকট নিরসন ও আবাসিক হল সংস্কারের দাবিতে হলের ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সুলতান আহমেদের কুশপুত্তলিকা পুড়িতে পদত্যাগের দাবি জানান। আন্দোলনের খবর পেয়ে তিন আবাসিক শিক্ষক হলে আসলে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে প্রায় দুঘণ্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তালা খুলে দেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বুধবার বিকালে আবাসিক হলটির দ্বিতীয় তলার ছাদ থেকে পলেস্তারের সঙ্গে ইট খসে পড়লে দুই শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা হলেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের শিপন। এরপর শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে হলের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেয়া হয়। হল প্রভোস্টের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েও প্রতিবাদ জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ খবর পেয়ে হলটির তিন আবাসিক শিক্ষক আরিফ রহমান, কফিল উদ্দিন ও আবু বক্কর সিদ্দিক আসলে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক হলটির বেহাল দশা। কিন্তু কোন অভিভাবক যেন নেই। পানি ও বিদ্যুতের সংকটে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। হলের কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত আসবাবপত্র নেই? এছাড়া হলের বর্ধিতাংশের অবস্থাও খারাপ। হলের বিদ্যুতের লাইন তিনটা। একদিকে বিদ্যুৎ থাকলে অন্যদিকে থাকে না। নিয়মিত হলের ছাদ খসে পলেস্তার-ইট পড়ে। কিন্তু এসব অভিযোগ জানিয়েও কোন কাজ হয় না। আর হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সুলতান আহমেদ গত এক বছরেও হলে আসেননি।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান খান বলেন, হলের বর্ধিতাংশের অবস্থা শহরাঞ্চলের একটি বস্তির চেয়েও খারাপ। আমরা পানির সংকটের কথা দীর্ঘসময় জানিয়ে আসছি? কয়েক মাস আগে হাউজ জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। হলের একটি কক্ষে খাট আছেতো, টেবিল নেই। আসবাবপত্র প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকের মত আছে। এছাড়া হলে বিভিন্ন সময় পুলিশ রেড দিলেও বৈধ কোন কর্তৃপক্ষ থাকেন না। অথচ নিয়মে আছে, হল কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে রেড দিতে হবে। আমাদের প্রশ্ন- সুলতান স্যার ছাড়া কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর যোগ্য কোন ব্যক্তি নেই। ওনি আবাসিক হলে আসেনই না। এজন্য সংকট নিরসন ও প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি? প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসেছেন। তারাও প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা আগামী রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসব। যদি এরপরও সমাধান না হয়, তবে আরো কঠোর আন্দোলনের যাবো।
অধ্যাপক ড. সুলতান আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে এই হলে প্রভোস্টের দায়িত্বে আছেন। এছাড়া তিনি প্রভোস্ট কমিটির আহবায়ক, সিন্ডিকেট সদস্য এবং আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দলের আহব্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আবাসিক হলের সংকট প্রসঙ্গে জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, পলেস্তার পড়ে দুই ছাত্র আহত হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা শিক্ষার্থী ও প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী রবিবার বসব। তাদের সমস্যাগুলো শুনে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।