চবিতে গণইফতার

7

চবি প্রতিনিধি

বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ইফতার কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা ও দ্রবমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণ ইফতার কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচির আহব্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ ফারাবী বলেন, ‘ইফতারকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো। রবিবার অক্সোফোর্ড ইউনিভার্সিটি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট দিয়েছে। সেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইফতার পার্টির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এবছর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইফতার আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য। ইফতার মাহ্ফিল আমাদের স¤প্রীতির বন্ধন শেখায়। সাস্ট এবং নোবিপ্রবির উচিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া। সারাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ইফতার অনুষ্ঠান পালনের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছি’।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মঈন উদ্দিন চিশতী বলেন, ‘ত্যাগ ও সংযমের অমিয় বার্তা নিয়ে এলো মুসলিমজাহানের আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র মাহে রমজান। দিনব্যাপী পানাহার ও পাপাচারমুক্ত থাকার মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি, নৈকট্য লাভ এবং পারস্পরিক ভাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার অন্যতম অনুষঙ্গ পবিত্র মাহে রমজান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা যায় রমজানে ইফতারকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় সামাজিক উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, সিনিয়র-জুনিয়রের দূরত্ব ভুলে আনন্দঘন পরিবেশে আয়োজিত হয় ইফতার পার্টি। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক সংগঠন প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্থানে ইফতার কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইফতার কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমরা এমন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমাদের এই গণ-ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে’।
গণইফতারে অংশগ্রহণকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ ৯০ শতাংশ মুসলিমের দেশ, যেখানকার অধিবাসী মুসলিমদের করের টাকায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনসহ যাবতীয় প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহ হয়। অথচ কতিপয় দ্বি-চারী চরিত্রের অধিকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ঘটা করে পাশ্চাত্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং প্রণোদনার বাস্তবায়ন করতে পারলেও মুসলিমদের পবিত্র মাস রমাদানে ইফতার পার্টি করার ক্ষেত্রে তারা বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। যা তাদের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে’।