চন্দনাইশ ফতেনগরে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ

304

দক্ষিণ চট্টগ্রামের মসজিদের উপজেলা চন্দনাইশ। ফতেনগর সিকদার বাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে তুরস্কের ব্লু মসজিদের আদলে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ফতেনগর সিকদার বাড়ি জামে মসজিদ। চন্দনাইশ উপজেলার ফতেনগর গ্রামে সিকদার বাড়ি জামে মসজিদটি কবরস্থানসহ ২ একর জমির উপর পুকুরসহ নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে অদ্যবধি নির্মাণশৈলী কাজ এগিয়ে চলেছে।
ইতোমধ্যে মসজিদের ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হলেও মসজিদ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে পুরো এ বছর অতিবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তুরস্কের ব্লু মসজিদের আদলে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন শিকদার বাড়ি জামে মসজিদটি চন্দনাইশ উপজেলায় নয় পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে বিজ্ঞমহল অভিমত ব্যক্ত করেন। মসজিদের পশ্চিমপাশে পুকুরের পানি ঘেঁষে মিম্বর নির্মিত হওয়ায় পশ্চিম পাশ থেকে মসজিদটি দেখতে আরো দৃষ্টিনন্দন মনে হয়। চন্দনাইশ উপজেলায় ৩ শতাধিক মসজিদ রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী থেকে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে দৃষ্টিনন্দন, ব্যয়বহুল ২৬ টি মসজিদ, একইভাবে গাছবাড়িয়া কলেজ গেট থেকে বরকল ব্রিজ পর্যন্ত শহীদ মুরিদুল আলম আলম সড়কের দু’পাশে ২৭টি মসজিদ রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার ফতেনগর সিকদার বাড়িতে প্রয়াত প্রতিথযশা আইনজীবী বদিউল আলমের ছেলে জিয়াউল কবির আদিল নিজস্ব অর্থায়নে তুরস্কের ব্লু মসজিদের আদলে বিগত ৫ বছর ধরে নির্মান শৈলী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রকৌশলী সোহেল মো. শাকুর। অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং সব ধরণের কারুকার্য সম্পন্ন এ মডেল মসজিদটি নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে ৬ বছরের অধিক সময় ব্যয় হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে মডেল মসজিদ নির্মানের কাজ হাতে নিয়েছে। দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে প্রতিটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। এ সকল মসজিদে দৈনিক ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৪’শ ৪০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪’শ জন নারীর নামাজের ব্যবস্থা থাকবে।
এ ক্যাটাগরিতে ৬৮টি ৪ তলা বিশিষ্ট লিফটসহ নির্মিত হবে ৬৪টি জেলা শহরে, ৪ টি সিটি কর্পোরশনে। এ মসজিদগুলোর আয়তন হবে ২ লক্ষ ৮১ হাজার ৫৮৪ বর্গ মিটার। বি ক্যাটাগরিতে ৪’শ ৭৬ টি মসজিদ ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭’শ ৪২ বর্গ মিটার আয়তনে।
সি ক্যাটাগরিতে ১৬ টি মসজিদের আয়তন ৬১ হাজার ২৫ বর্গ মিটার। প্রতিটি মসজিদে প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসাথে কোরআন তেলওয়াত ও ইসলামীক বই পড়তে পারবে।
এ সকল মসজিদে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১ লক্ষ ৬৮ হাজার শিশু প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ২ হাজার ২’শ ৪০ জন দেশী-বিদেশী অতিথির আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি উপজেলায় ৪০ শতক জমির উপর এ সকল মসজিদ স্থাপন করা হচ্ছে। চন্দনাইশ উপজেলা সদর মসজিদটি সরকারীভাবে একই নিয়মে নির্মাণ করা হবে বলে জানা যায়।
মসজিদের পাশাপাশি থাকবে ইসলামিক সাংকৃতিক কেন্দ্র সেখানে নারী পুরুষের জন্য পৃথক অজু, নামাজের ব্যবস্থা, লাইব্রেরি, গবেষণা, দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম, কোরআন তেলওয়াত, হেফজখানা, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশী পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মোয়াজ্জিনদের আবাসন ব্যবস্থা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসসহ সকল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক কথায় সরকারি মডেল মসজিদগুলি হবে পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিষ্ঠান, সেখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে।