চন্দনাইশে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি

36

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজিভান্ডার নামে খ্যাত শঙ্খ তীরবর্তী দোহাজারী, বরমা, বৈলতলী, ধোপাছড়ি, সাতকানিয়া কালিইয়াশ, চরতি, নলুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর দু’দিনের প্রবল বৃষ্টির কারণে শঙ্খ তীরবর্তী এলাকায় উৎপাদিত শীতকালীন বিভিন্ন সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শঙ্খ তীরবর্তী এলাকায় কয়েক হাজার একর জমিতে শীতকালীন সবজি রোপণ করেছেন কৃষকেরা। বৃষ্টির কারণে এ সকল এলাকায় রোপণকৃত শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাধাকপি, মূলা, বরবটি, তিতকরলসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে পানি জমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষকরা জানান, শীতকালীন সবজিতে বৃষ্টির পানি পড়লে মরে যায়। সম্প্রতি কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে চলতি মৌসুমে দফায় দফায় শীতকালীন সবজি রোপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা। কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠার জন্য পুনরায় সবজি রোপণ করার পর হঠাৎ করে লাগাতার দু’দিন বৃষ্টির কারণে পুনরায় ক্ষতির শিকার হলেন কৃষকেরা।
কৃষক আবিদুর রহমান জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৬ কানি জমিতে সবজি চাষ করেছেন। প্রতি কানি জমি ২ হাজার টাকা খাজনায় নিয়ে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি মূলা, শসা, শীম, বেগুন, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপির চাষ করেছেন। কিছু কিছু সবজির ফলন তোলা শুরু করার সময় বৃষ্টি হওয়ায় সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বেঁচে থাকা বেগুন, তিতকরল, ঢেঁড়শ, বরবটি, আলু, শীম ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বৃষ্টিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা চাষে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সহ¯্রাধিক কৃষকের মুখে হতাশার চাপ। চন্দনাইশে ৩টি হিমাগার রয়েছে। তৎমধ্যে সাঙ্গুতে ২ হাজার, চট্টলাতে ৪ হাজার, বার আউলিয়ায় ৮ হাজারসহ ১৪ হাজার মেট্রিকটন খাদ্য মজুদ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে সাঙ্গুতে ফ্রূট এবং শুটকি রাখা হয়েছে। তাছাড়া চট্টলা ও বার আউলিয়া হিমাগারে ১০ থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন বীজের আলু রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। চলতি মৌসুমের আগস্ট মাসে খাবারের সব আলু বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এখন এ সকল হিমাগারে কোন ধরনের খাবারের আলু নেই বলে জানান। প্রতি মৌসুমে এ সকল হিমাগারে তাদের চাহিদার চেয়ে অর্ধেক আলু মজুদ থাকে বলে জানান তারা। প্রতি মৌসুমের জন্য ৫০ কেজির ১ বস্তা আলু হিমাগারে ভাড়া দিতে হয় ২৫০ টাকা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী বলেন, লাগাতার দু’দিন বৃষ্টির কারণে দোহাজারীর শঙ্খ তীরবর্তী এলাকার সহস্রাধিক কৃষকের শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে টেলিফোন করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রাণী সরকার বৃষ্টির কারণে শীতকালীন সবজির তেমন ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বৃষ্টির মাত্রা আরো বাড়লে হয়ত শীতকালীন সবজির ক্ষতি হতে পারে। চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান।