চন্দনাইশে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা

25

মো. শাহাদাত হোসেন, চন্দনাইশ

চন্দনাইশে চলছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই। উপজেলার কৃষকদের ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের উৎসব। ধান কাটার এ ভরা মৌসুমে চলছে আবারও শ্রমিক সংকট। বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৬২০ হেক্টর। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রাণী সরকার বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পর দ্রুত ধান কাটা চলছে। আমরা যান্ত্রিককরণের (হারভেস্টার মেশিন) ওপর জোর দিয়েছি। এতে দ্রুত ধান কাটা, মাড়াই হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ধান কাটা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই কার্যক্রম চলছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো বৃষ্টির কারণে ধান কাটায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে পাকা ও আধা পাকা ধান নুয়ে পড়েছে। তবে ধান কাটার ভরামৌসুমে শ্রমিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে জানান কৃষকেরা। অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। বৈশাখ মাসে কালবৈশাখীর আশঙ্কা থাকে, এখন তার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের পাকা ধানের ক্ষতি হচ্ছে। চন্দনাইশ পৌরসভার আবুল বশর ও পাঠানদন্ডীর আবদুস ছালাম বলেছেন, বৃষ্টির কারণে ধান কাটায় বড় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি বিভাগ পাকা ধান দ্রæত কাটার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে দ্রæত কাটা যাচ্ছে না। দু’বেলা ভাত ও চা-নাস্তাসহ এক হাজার বা তারও বেশি মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। উপজেলার বরকল, বরমা, সাতাবাড়ীয়া, বৈলতলী, হাশিমপুর, দোহাজারী, ধোপাছড়িতে সীমিত আকারে ধান কাটা চলছে। চন্দনাইশ পৌরসভার স্কীম ম্যানেজার ও কৃষক আবদুস ছাত্তার বলেছেন, চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে চাষিদের বেগ পেতে হচ্ছে। বিগত কয়েকদিনে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ধান কাটতে কৃষকদের বেগ পেতে হয়েছে। পুরোদমে ধান কাটা শুরু হওয়ার পর কালবৈশাখী বা ঝড়ো হাওয়া বইয়ে গেলে পাকা ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে দ্রæত ধান কাটা শেষ করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
চাষিরা ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষিরা বলেন, ধান খেতে রোগবালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম ছিল। এতে ফলন ভালো হয়েছে। এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন ৫.৫ থেকে ৬ টন ধান হবে।
প্রতি কানিতে ১’শ থেকে ১’শ ১০ আড়ি ধান উৎপান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। ধান কাটা, মাড়াই ও গোলা তোলা শুরু করেছেন চাষিরা। তবে শ্রমিক সংকট ও মজুরি বেশি গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। গত বোরো মৌসুমেও ধান কাটা শুরু হওয়ার পর শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। বেকায়দায় পড়েছিল কৃষকেরা। তখন করোনা মহামারি ও সরকারি বিধি নিষেধের কারণে সংকট তীব্র ছিল। ঐ সময়ে ধান কাটায় সহায়তা করেছিল সরকারি দলের কৃষকলীগ, ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।