চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন আজ

67

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-পাঁচলাইশ-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচন আজ। কালুরঘাট সেতু ইস্যুতে এ আসনের নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যার মধ্যেই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ১৭০টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৯৬টি কক্ষে চার লক্ষ ৭৪ হাজার ৪৮৫ ভোটার ভোট প্রদান করবেন। ভোটগ্রহণে নিয়োজিত থাকবেন তিন হাজার ৭৫৮জন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা। ভোটের মাঠে আছেন ছয়জন প্রার্থী।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বদেশকে বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ এখনো ভালো আছে। আশা করি সুন্দর ও সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারবো। সবক’টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার ভোটকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরব আছে। নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিতে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুইজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। পাশাপাশি নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণে আমার নেতৃত্বে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমও থাকবে’
জানা যায়, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির আবু সুফিয়ান, টেলিভিশন প্রতীকে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ, কুঁড়েঘর প্রতীকে ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত ও আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এ আসনে পুরুষ ভোটার দুই লক্ষ ৪১ হাজার ১৯৮ জন ও মহিলা দুই লক্ষ ৩৩ হাজার ২৮৭ জন মিলিয়ে মোট ভোটার চার লক্ষ ৭৪ হাজার ৪৮৫জন। এরমধ্যে চান্দগাঁও থানাধীন (৪,৫,৬নং ওয়ার্ড) ও পাঁচলাইশ থানার (৩,৭নং ওয়ার্ড) মোট ভোটার তিন লক্ষ ১০ হাজার ৩৫৪ জন। ১৭০টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৯৬টি কক্ষে ভোটাররা ভোট প্রদান করবেন। এরমধ্যে নগরীর পাঁচ ওয়ার্ডে কেন্দ্র সংখ্যা ১০১টি ও বোয়ালখালীতে ৬৯টি। এসব ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ১৮টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া নির্বাচনে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যের সমন্বয়ে ১৪টি মোবাইল ফোর্স, ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের ৬টি টহল দল এবং ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
গতকাল রাতে কধুরখীল এলাকায় নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পূর্বদেশকে বলেন, ইভিএমে ভোট হওয়ায় ঝামেলা কম হবে বলে ধারণা করছি। তবুও কেন্দ্রে ১৮-১৯জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। আমরা আগেভাগেই কেন্দ্রে এসে ভোটগ্রহণের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
ভোটাররা জানান, কালুরঘাট সেতু এ এলাকার প্রধান সমস্যা। এ সেতু নির্মাণের সাথে পুরো উপজেলার উন্নয়ন জড়িত। যে প্রার্থী কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করতে পারবে তার পক্ষেই ভোটারদের অবস্থান থাকবে। ভৌগলিকগত কারণেও এ আসনটি ব্যতিক্রম। কর্ণফুলী নদী এ আসনকে ভাগ করেছে। নগরীর পাঁচ ওয়ার্ড থেকেই প্রার্থীর জয়-পরাজয় নির্ধারণ হবে।
গোমদন্ডী এলাকার ভোটার সাহদাত হোসেন বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ নিয়ে উৎকন্ঠায় আছি। ভোট দিতে পারলে ভোটাররা যোগ্য প্রার্থীই বেছে নিবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সব প্রার্থীই কালুরঘাট সেতু করার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে কে করতে পারবে তা সময়েই বলে দিবে। তবে এ সেতু আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। এক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছাই প্রাধান্য পাবে।’