চট্টগ্রাম বন্দর নির্দেশক ‘বাতিঘর’

305

মুশফিক হোসাইন

‘বাতিঘর’ হচ্ছে সুউচ্চ মিনার আকৃতির স্তম্ভ যা থেকে রাতের বেলা সামুদ্রিক নাবিকদের দিক নির্দেশনায় বিশেষ ব্যবস্থায় আলোরচ্ছটা (ফ্লাস) দেয়। এছাড়াও সমুদ্র বন্দরের অগভীর অঞ্চল এবং সামুদ্রিক প্রবাল প্রাচীর সম্পর্কেও ধারনা দেয়। সামুদ্রিক বাণিজ্যের ইতিহাস হাজার হাজার বছরের। বণিকেরা তাদের বাণিজ্য সম্ভার নিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আসা যাওয়া করে। এজন্য তাদের সমুদ্র পাড়ি দিতে হয়। অতীতে সমুদ্রগামী জাহাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি ছিল না। নাবিকেরা সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করে চলাচল করতো। এক্ষেত্রে আকাশের তারার প্রতি তীক্ষè দৃষ্টি রেখে জাহাজ পরিচালনা করতে হতো। প্রাচীন কালে বন্দর, সমুদ্রের অগভীর অঞ্চল ও প্রবাল দ্বীপ চিহ্নিত করার জন্য রাতের বেলা পাহাড়ের চূরায় আগুনের কুন্ডলি জ্বালিয়ে রেখে নাবিকদের সতর্ক চিহ্নিত করার রেওয়াজ ছিল। এক্ষেত্রে নাবিকেরা আকাশের তারার প্রতি তীক্ষè দৃষ্টি রেখে নৌ-চলাচল করে গন্তব্যে পৌঁছে যেত। জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে মানুষ বাতিঘর/লাইট হাউজ নির্মাণ করে পথ নির্দেশনের কলা-কৌশল রপ্ত করে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও বিখ্যাত বাতিঘর হচ্ছে মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর। ধারণা করা হয়, টলেমীয় রাজবংশের সময় ২৪৭ খৃষ্টপূর্বে এটি নির্মিত হয়। বাতিঘরের আধুনিকায়তন ঘটে মূলত আঠারো শতাব্দিতে। ষোল শতাব্দির ইংল্যাÐের ‘এডিস্টোন রক্সলাইট হাউস’ (ঊফফু ংঃড়হব জড়পশং ষরমযঃঃড়ঁংব) ছিল প্রথম খোলা সামুদ্রিক বাতিঘর। আন্তর্জাতিক মেরিটামস্ আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বন্দরের দিকনির্দেশনার জন্য বাতিঘর নির্মাণ বাধ্যতামূলক।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাস প্রায় দুই হাজার বছরের। নবম শতাব্দিতে আরবীয় বণিকেরা চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে বাণিজ্য শুরু করে। ঐতিহাসিক তথ্যানুয়ায়ী হিজরীপূর্ণ ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মরু অঞ্চলে বাদশা নাজ্জাসীর দেওয়া জাহাজে করে ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর আত্মীয় ও বিখ্যাত সাহাবী হযরত সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (র.) চারজন সহযোগী সাহাবী নিয়ে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম আগমন করেন। চট্টগ্রামে ৪-৫ বছর অবস্থানের পর তিনি ধর্মপ্রচারের জন্য চীনগমন করেন। সেই সূত্রে আরবীয় ধর্মপ্রচারক ও বণিকদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। বণিকদের চলাচল ও পশ্চাদপদ উর্বর বাজারের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ও প্রসার ঘটতে থাকে। তামলিপ্তের বৌদ্ধ শাসনের সময়ও চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য পাওয়া যায়। ত্রয়োদশ শতকের মাঝামাঝি সপ্তগ্রাম ও চট্টগ্রাম বন্দরের উত্থানের কথা জানা যায়। রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলে আরকানি, মগ, পুর্তগীজের পরে ইংরেজদের আগমন ঘটে।
আঠারো শতকের মাঝামাঝি চট্টগ্রামে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও প্লাবনের কারণে বন্দরের পোতাশ্রয়ের বিভিন্ন অংশে চর জাগার পাশাপাশি প্রবাল প্রাচীরের কারণে সমুদ্রগামী জাহাজ চলাচলে বিঘœ ঘটতে থাকে। সামুদ্রিক বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার ব্রিটিশরাই চট্টগ্রাম বন্দর চিহ্নিত ও পোতাশ্রয়ে প্রবেশের জন্য প্রথম বাতিঘর নির্মাণ করে। কুতুবদিয়া বাতিঘর সর্বপ্রথম নাবিকদের বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার কথা জানান দেয়। অতপর সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, নরম্যান্স পয়েন্ট ও পতেঙ্গা বাতিঘর চট্টগ্রাম বন্দর ও পোতাশ্রয়ের দিকনির্দেশনা দেয়। এই বাতিঘর সমুহের নির্দেশনা অনুসরণ করে সামুদ্রিক জাহাজ নিরাপদে চট্টগ্রাম চ্যানেলে প্রবেশ করে থাকে এবং যথাযথভাবে নোঙ্গর করে। নিম্নে বাতিঘর সমূহের বর্ণনা দেয়া হলো
১. কুতুবদিয়া বাতিঘর: ১৮২২ সালে কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে ৪০ মাইল দূরে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যা ১৮৪৬ সালে প্রথম চালু হয়। সুউচ্চ ইটের গাথনির উপর নিশেষ কৌশলে নির্মিত মূল বাতিঘরটি সাগরে বিনীন হওয়ায় সামান্য দূরে ধুরং ইউনিয়নে ১৯৭২ সালে লোহার কাঠামোয় উপর পুনরায় নির্মিত হয়। প্রথম বাতিঘরটি ক্যাপ্টেন হেয়ারের নির্দেশনায় এবং প্রকৌশলী জেএইচ টু গুড এর তত্ত¡াবধানে নির্মিত হয়েছিল। এতে তৎসময়ে মাত্র ৪৪২৮ টাকা ব্যয় হয়েছিল। বর্তমান বাতিঘরের উচ্চতা ১২০ ফুট। প্রতি দশ সেকেÐে তিনটি সাদা আলোর ঝলকানি (ফ্লাস) হয়। রাতের বেলা নাবিকেরা ২২০ কিলোমিটার দূর থেকে এর আলো দেখতে পায়। এই আলো থেকে তারা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা প্রথম সনাক্ত করে। ১৯৭১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এর ওয়ারলেস সেটটি নষ্ট হয়ে যায়। ডিজেল চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে ১৫টি বাটারি চার্জ করে আলো জ্বালানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ইে বাতিঘরে সৌরবিদ্যুৎ সংযুক্ত হয়েছে। এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ সরকারের নৌ-বাণিজ্য দপ্তর।
২. সেন্টমার্টিন বাতিঘর: বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সমুদ্র বন্দর হিসাবে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় ১৯৭৬ সালে এই বাতিঘরটি নির্মিত হয়। ফ্লোকাল প্লেনসহ এর উচ্চতা ৩৯ মিটার (১২৮ ফুট) প্রতি বিশ সেকেন্ড অন্তর দু’টি সাদা আলোর ফ্লাস বা ঝলকানি জ্বলে ওঠে। লন্টন গ্যালারিসহ এর উচ্চতা ৩৫ মিটার (১১৫ফুট) বর্গাকার পিরামিডিকাল আকৃতির লোহার কাঠামোর উপর বাতিঘরের টাওয়ার স্থাপিত হয়েছে। রাতের বেলা নাবিকেরা ১৯.৮ নটিক্যাল মাইল দূর থেকে দিক নির্দেশনা পায় এই বাতিঘর থেকে। সম্প্রতি এই বাতিঘরে সৌরবিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে। এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ সরকারের নৌ-বাণিজ্য দপ্তর। এই বাতিঘরের মাধ্যমে নাবিকেরা চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে যাত্রা অব্যাহত রাখে।
৩. কক্সবাজার বাতিঘর: ১৯৭৬ সালে এটি নির্মিত হয়। ফ্লোকালপ্লেনসহ এর উচ্চতা ৫৪ মিটার (১১৭ ফুট)। এই বাতিঘর থেকে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একবার সাদা আলোর ঝলকানি বা ফ্লাস জ্বলে উঠে। যা রাতের বেলা ২৪.৫ নটিক্যাল মাঈল থেকে দেখা যায়। দশ মিটার (৩৩ ফুট) কাঠামো ও একটি দুই বর্গক্ষেত্রের কংক্রিটের ভবনের ছাদে এর গ্যালারির উপর লোহাজার কাঠামোর উপর এর বাতি স্থাপিত। এই বাতির আলো দেখে নাবিকেরা নিশ্চিত হয় যে তারা চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে। এই বাতিঘর থেকে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একবার সাদা আলো ফ্লঅস করে। কক্সবাজার জেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালন থেকে এবং স্বয়ংক্রিয় জেনারেটরের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা আছে। সাম্প্রতিক সময়ে সৌর বিদ্যুৎ যুকাত হয়েছে। এটি কক্সবাজারের ইনানী রিসোর্ডের বড়ইতলী ইউনিয়নে স্থাপিত। বাংলাদেশ সরকারের নৌ-বাণিজ্য দপ্তর এটি পরিচালনা করে।
৪. নরম্যান্স পয়েন্ট বাতিঘর: এই বাতিঘরটি আনোয়ারা উপজেলার পার্কীতে অবস্থিত। ব্রিটিশরা ১৯৬৬ সালে এটি নির্মাণ করে। কুতুবদিয়ার প্রথম বাতিঘরের আদলে গোলাকার সিমেন্ট কংক্রিটের স্তম্ভর মিনার। যা আমি ১৯৬০ সালে দেখেছি। পরবর্তীতে সমুদ্রতট ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সরিয়ে লোহাজার কাঠামোর উপর বর্গাকার পিরামিড় আকৃতিতে তৈরী হয়। সমুদ্র তীরে পুরানো স্তম্ভের ভাঙ্গা ধংসাবশেষের দেখা পেয়েছি ২০১৫ সালে। চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের জন্য এই বাতিঘর সামুদ্রিক জাহাজকে নৌ-চলাচলে সাহায্য করে। এইএএলএ এর (ওঅখঅ) মান অনুযায়ী তৈরী এই বাতিঘরটি চট্টগ্রাম বন্দরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। সামুদ্রিক জাহাজসমূহকে সয়ংক্রিয়ভাবে আলোর ফ্লাস বা ঝলকানি দিয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রতি ১০ সেকেন্ড অন্তর সাদা আলোর বিচ্ছুরণ দিয়ে থাকে। এই আলো বাম থেকে ডানে ঘূর্ণিয়মান। সমুদ্রের ১৭ মাইল দূর থেকে নাবিক এই আলো অনুসরণ করে এবং চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখো নৌ-চালনা করে। ২০০৮ সালে এই বাতিঘরে আধুনিনক রাডার সরঞ্জামাদি স্থাপিত হয়। রাডার বিকণের কোড ব্যবহার করে সামুদ্রিক জাহাজের নাবিক চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে যোগাযোগ করে যাত্রা পথ সনাক্ত পূর্বক নিরাপদ নৌ-যাত্রায় সঠিকভাবে এবং নির্বিঘেœ অব্যাহত রাখে। লোহার কাঠানোর উপর দাঁড়িয়ে থাকা বাতিঘরের উচ্চতা ৪৫ মিটার। কাঠামোটি লাল সাদা রঙের। সমুদ্র তট থেকে ৫৩ মিটার উচ্চতায় বাতির বিচ্ছরন হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের পোতশ্রয়ে প্রবেশের জন্য এই বাতি ঘরের গুরুত্ব বেশি। এটি সৌরশক্তি দ্বারা চালিত। এটি পরিচালনার জন্য কোন অপারেটরের প্রয়োজন হয় না। তবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু কর্মচারী রয়েছে। এটি ২০.১র্র্১ , ৩৯.৯র্৩ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৯১.৪র্৯, ১৭.০র্০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান।
৫. পতেঙ্গা বাঘির: চট্টগ্রাম বন্দরের প্রোতাশ্রয়ে প্রবেশ এবং নিরাপতদভাবে নোঙ্গঁর করার সর্বশেষ বাতিঘর এটি। চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমি পশ্চিমপ্রান্ত সংলগ্ন সমূদ্রতীরে এটির অবস্থান। এটিও চট্টগ্রাম বন্দরের তত্ত¡াবধানে পরিচালিত এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত। এই বাতিঘর থেকে প্রতি ১০ সেকেন্ড অন্তর লাল আলো বিচ্ছুরিত হয়। যা ১৩ নটিক্যাল মাইল দূর থেকে দেখা যায়। এর উচ্চতা ২৪ মিটার। চ‚ড়ায় আছে সৌরশক্তিচালিত ঘূর্ণয়মান এলইডি বাতি। এই বাতিডান থেকে বামে ঘোরে। অর্থাৎ বাম বরাবর চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল। ২০০৮ সালে এতে যুক্ত হয় আধুনিক রাডার প্রযুক্তি। নাবিকেরা রাডার বিকনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে। নির্ধারিত রাডার কোড ব্যবহার করে নাবিকেরা নিরাপদে ও সঠিক ভাবে নৌ চালনা করে বন্দর পোতাশ্রয়ে প্রবেশ করে। বন্দরে প্রবেশ করার জন্য একটি সর্বশেষ বাতিঘর। লোহার কাঠামোটি অনুভূমিক (Horizontal) ও বাঁকানো পিরামিড আকৃতির। লোহারপাতগুলো সাদা কালো রং এর। এই বাতিঘরে নির্দেশনা নিয়ে সামুদ্রিক জাহাজসমূহ নিরাপদে বন্দরে জেটিতে ভিড়তে সক্ষম। তবে পোতাশ্রয়ে ঢোকার জন্য নিয়মানুযায়ী বন্দর পাইলটের সহায়তা নিতে হয়। এটি ২২.১র্৩, ৪র্৫ উত্তর অক্ষাংশে ৯১.৪র্৮, ১২.৪র্০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।
৬. জুলদিয়া সিংন্যাল স্টেশন: কর্ণফুলী নদীতে সামুদ্রিক ও আভ্যন্তরীন নৌযান চলাচল ও নিরাপত্তার জন্য জুলদিয়া পাহাড়ে ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত হয় এই কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্রের টাওয়ারে বন্দর ও মেরিটাইম নির্ধারিত পতাকার সাহায্যে সিংন্যাল অপারেটর সংকেত প্রদান করা হতো। যা মেনে নৌযানগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ১৯৬০ সালে আমার এই কেন্দ্রটি ভ্রমণ ও রাত্রিযাপনের সুযোগ ঘটে। তখন পাহাড়স্থ কেন্দ্রের ঝোপে ঝাড়ে নানা প্রজাতির পাখি ও বুনো খরগোসের দেখা পাই। এখানে পর্তুগিজ আমলের একটি চুনশুরকির দূর্গ দেখতে পাই। বন্দরের রেডিও সংকেত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এখন নাবিকেরা রেডিও সংকেতের মাধ্যমে নৌ-চালনা করে থাকে। ফলে এই সিংন্যাল স্টেশনটি বলা যায় অনেকাংশে পরিতেক্ত অথচ এই সেটশনটি এক সময় নিরাপদ নৌ চলাচলে অতিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে কর্ণফুলী মোহনা ও নদীর নৌযান পরিচালনায়। সমুদ্র তট থেকে ২৮০ ফুট উচ্চু পাহাড়ে ২২.১র্৪,০র্৫ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৯১.৫র্০, ৩র্১ পূর্বদ্রাঘিমাংশে অবস্থান।
উল্লেখযোগ্য যে, বাতিঘরগুলো পরিচালনায় সরকার এবং বন্দর নির্দিষ্ট হারে চার্জ আদায় করে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন লাইট হাউস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী নেট রেজিস্ট্রেশন টন (ঘজঞ) হিসাবে বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে প্রতিটন পণ্যের বিপরীতে ৫.০০ টাকা এবং ১০ টনের উপর ফিসিং ট্রলার থেকে দুই টাকা হারে বাতিঘর চার্জ আদায় করে থাকে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সরকার এই খাত থেকে ৮ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা আয় করে। প্রাচীনকাল থেকে বাতিঘর নিরাপদে সামুদ্রিক জাগাজ ও নৌ পরিচালনার জন্য অপরিহার্য্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
তথ্য সূত্র : ১. মোহাম্মদ জাফর আলম, জয়েন্ট সেক্রেটারী, বাংলাদেশ সরকার এবং বন্দর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) সম্পাদক- বন্দর বার্তা।
২. বন্দর বার্তা- ওমর ফারুক ইমন, ফেব্রুয়ারী ২০২১, বর্ষ-৬, সংখ্যা-০২, পৃষ্ঠা ১৪।
৩. সিপিএ ইয়ার বুকÑ ১৯৮৩ সাল, পৃষ্ঠা ৫।
৪. মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ কালচার, পৃষ্ঠা-২৪৯।
৫. উইকিপিডিয়া ও ইন্টার নেট (গুগল)
৬. সিসিএ ইয়ার বুক- ১৯৬৫ইং, ৮।
লেখক: কবি, নিসর্গী এবং ব্যাংক নির্বাহী (অব.)