চট্টগ্রাম থেকে যারা হতে পারেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী

108

প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীর মর্যাদা আগেই পেয়েছেন বেশ কয়েকজন সিটি মেয়র। বঞ্চিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নগরীর সব প্রার্থীকে জয়ী করতে ভূমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রীর ‘গুড বুকে’ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। যে কারণে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ এ নেতাকে এবার প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়ার সম্ভাবনা জেগেছে।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ছাড়াও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়ে পতাকাবাহী গাড়িতে চড়ার আলোচনায় আছেন কমপক্ষে সাতজন সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও জাপার তিনজন সিনিয়র নেতা। যদিও নির্বাচিত সকল এমপির নিজ নিজ এলাকায় মন্ত্রী হওয়ার গুঞ্জন চলছে। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও সাংসদদের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হতে অনেকের নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে তিন থেকে চারজন নেতা ঠাঁই পেতে পারেন। তবে কার কার ভাগ্যে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী জুটছে তা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও মন্ত্রীসভার আকারের উপর অনেকটা নির্ভর করছে। এজন্য মন্ত্রীসভা গঠন পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হবে চট্টগ্রামবাসীকে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও সরাসরি বক্তব্য দিতে রাজি হননি কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘সরকার ও দল পৃথক রাখার একটি প্রক্রিয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। যে কারণে দলের দায়িত্বে থাকা নেতাদের মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছাড়া যে কাউকে মন্ত্রীসভায় নাও রাখতে পারেন। সে হিসেবে পুরানো অনেক মন্ত্রীই বাদ পড়ার সম্ভাবনা আছে। আবার নতুন অনেকেই মন্ত্রীসভায় ঠাঁই নিলে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কার্যকর মন্ত্রিসভা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ বিষয়টি পুরোটাই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। যে কারণে শেষপর্যন্ত মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন তা স্পষ্ট নয়। ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। তবে সিটি মেয়রকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়ার গুঞ্জন চলছে।’
জানা যায়, কোতোয়ালী আসন থেকে সরকারি দলের এমপি হলেই মন্ত্রী হওয়াটাই যেন নিয়ম। সে হিসেবে এবারো নওফেলের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি তাই হয় দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সংসদ সদস্যের পর মন্ত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ভাগ্যবান নেতাদের একজন হবেন নওফেল। তবে নওফেলকে জায়গা ছাড়ায় ‘সরকারের কাছের মানুষ’ হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টি নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও গাড়িতে পতাকা উড়ানোর সম্ভাবনা আছে। এ আসনের আরেক সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসি আবারো মন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে আছেন। আলোচনায় আছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদও। হ্যাটট্রিক বিজয় অর্জন করায় নগরের নেতাদের মধ্যে সংসদ সদস্য এমএ লতিফও এবার মন্ত্রীত্ব পেতে পারেন। উত্তর চট্টগ্রামের নেতাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন কমপক্ষে চারজন নেতা। ষ পৃষ্ঠা ১১, কলাম ১
ষ প্রথম পৃষ্ঠার পর

সদ্য নির্বাচিত হওয়া সংসদ সদস্যদের মধ্যে এবারো ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রী হতে পারেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী এবং দশম জাতীয় সংসদের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এবারো মন্ত্রী হলে চট্টগ্রামের একমাত্র নেতা হিসেবে ‘হ্যাটট্রিক’ করবেন তিনি। রাউজান থেকে টানা চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এবারো মন্ত্রী হতে পারেন। বরাবরের মতো এবারো তার কর্মী-সমর্থকরা ফজলে করিমকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়ে ফেসবুকে ঝড় তুলছেন। এরমধ্যে দুই দফা স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও দুই দফা সদস্য পদে থাকা এ নেতা মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে হতবাক হবেন না চট্টগ্রামবাসী।
নবম জাতীয় সংসদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদ। এখনো বন ও পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি। সাংগঠনিকভাবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদের মন্ত্রীত্ব পাওয়াটা বিস্ময়কর হবে না।
হাটহাজারী থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন গুঞ্জন চলছে। সেক্ষেত্রে মহাজোটের হিসাব-নিকাশে জিয়াউদ্দিন বাবলুর ভাগ্যে মন্ত্রীত্ব জুটলে ব্যারিস্টার আনিসের কপাল পুড়তে পারে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের নেতাদের মধ্যে এবারো সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ মন্ত্রী হতে পারেন। দশম জাতীয় সংসদে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে জাবেদ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। কোনধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা না নিয়েই প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সন্তান হিসেবে এবং ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে সরকারের উচ্চমহলে এ নেতার গ্রহণযোগ্যতা আছে। এর বাইরে গিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আরো একজন সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের ভেতর-বাইরে আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে প্রথমবারের মতো ককক্সবাজার থেকে একজন সংসদ সদস্যকে প্রতিমন্ত্রী করার কথা শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুল সরোয়ার কমল ও মহেশখালীর সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক আলোচনায় আছেন। কক্সবাজার সংশ্লিষ্ট তিনটি মন্ত্রণালয়ের যে কোন একটিতে তাদের যে কেউ দায়িত্ব পেতে পারেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বীর বাহাদুর ও দীপংকর তালুকদারের মধ্যে যে কেউ এবারো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন।