চট্টগ্রাম এখনও প্রস্তুতিতে

33

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সারাদেশে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে গতকাল বুধবার থেকে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করলেও চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন প্রস্তুতিতে। চট্টগ্রামে বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ২৬ জুন (রবিবার) থেকে। কারণ নগরীতে পাহাড়ধস ও নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন থাকার কারণে পণ্য বিক্রি সম্ভব হয়ে উঠেনি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও টিসিবি সমন্বয় কমিটির সদস্য কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী।
এছাড়াও বর্তমানে চলছে পণ্যের প্যাকেজিং। আর রবিবার থেকে শুরু হয়ে বিক্রি কার্যক্রম চলবে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত। জানা গেছে, শুধু চট্টগ্রাম নয় দেশের মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় গতকাল পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। এ সব জেলায় বিক্রি কার্যক্রম ২৬ জুন থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবির প্রধান কার্যালয়ের মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, বন্যার কারণে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোয় আপতত পণ্য বিক্রি কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেট বিভাগে বিক্রির তারিখ পরে জানানো হবে। সরেজমিনে নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে দেখা গেছে, টিসিবি’র তিন পণ্যের প্যাকেজিং শুরু হয়েছে। চিনি, ডাল আলাদা আলাদা ব্যাগে প্যাকেট করছেন কর্মচারীরা। আর এসবের দেখাশোনা করছেন একজন কাউন্সিলর।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং টিসিবি’র সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির মাধ্যমে এসব পণ্য উপকারভোগীদের কাছে বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো প্যাকেজিং এর দায়িত্ব পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওপর। তিনজন কাউন্সিলর- জহর লাল হাজারী, মো. মাসুম ও নিলু নাগ এসব মনিটরিং এর দায়িত্বে আছেন।
সমন্বয় কমিটির সদস্য কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী পূর্বদেশকে বলেন, কার্ডধারী প্রতিজনকে এ দফায় একবার পণ্য প্রদান করা হবে। আগামী মাসে এ কার্যক্রম শুরু হলে তারা পুনরায় আবার নিতে পারবেন। আমরা প্রতি ডিলারকে প্রতিদিন ৫০০ গ্রাহকের পণ্য একসাথে প্রদান করব। তারা তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে কার্ডধারীদের সরবরাহ করবেন।
তিনি আরও বলেন, একজন উপকারভোগী ৪০৫ টাকায় ২ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল এবং এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। এভাবে সারাদেশের এক কোটি গরীব গ্রাহক সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। আগামী দেড় বছর অর্থাৎ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টিসিবি’র পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে সরকার।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯৬৩ জন। আর প্রতি উপকারভোগীর কাছে এ দফায় সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি বিক্রি করা হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা ও মসুর ডাল ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করবে টিসিবি।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, এবার আগের মতো ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করবে না টিসিবি। শুধু ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ডিলারের দোকান বা নির্ধারিত স্থান থেকে টিসিবির এসব পণ্য কিনতে হবে। অর্থাৎ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ডিলাররা তাদের নিজ দোকান অথবা কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে পণ্য বিক্রি করবেন। জেলা এলাকায় ডিলাররা তার নিজ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি চাইলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮২ জন উপকারভোগী টিসিবি পণ্য ক্রয়ের সুবিধা পাচ্ছেন।