চট্টগ্রামে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব শুরু আজ

8

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত আজ থেকে শুরু হচ্ছে ৪র্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব। সারাদেশ থেকে আগত ৬০০ সঙ্গীতশিল্পীর অংশগ্রহণে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ উৎসব। সকাল ১০টায় একাডেমি চত্বরে উৎসবের উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। ‘সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত এ উৎসবে পরিবেশন হবে রবীন্দ্র, নজরুলসহ শোষণ বঞ্চনা বিরোধী গান। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার বাইরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন চতুর্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহব্বায়ক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
তিনি বলেন, যতদিন শ্রেণি বৈষম্য থাকবে, সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না, ততদিন গণসঙ্গীতের প্রয়োজনীয়তা থাকবে। জাতির জনকের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছি। কথা ছিল স্বাধীন দেশে শ্রেণি বৈষম্য থাকবে না। ধর্ম-বর্ণের কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সেজন্য বাহাত্তরের সংবিধানে চার মূলনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু জাতির জনককে হত্যার পর সেই যাত্রা থেমে গিয়েছিল। তারপর বহু কঠিন পথ আমাদের পার হতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যে রাষ্ট্রে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে বিধিনিষেধ মানতে হয়, সেখানে বাংলা, বাঙালি, বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব? সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে জাতীয় সংগীত ও উদ্বোধনী গণসঙ্গীত পরিবেশন করবেন ১৩৫ জন শিল্পী। সারা দেশের ৩২টি দল ও একক বরেণ্য গণসঙ্গীতশিল্পীরা অংশ নেবেন। তিন দিনে উৎসবে সারা দেশের প্রায় ৬০০ শিল্পী একত্রিত হবেন।
উদ্ভোধনী দিনে সকালের অধিবেশনে লালন সাঁইজির গান পরিবেশন করবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চট্টগ্রাম, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করবে নজরুলসংগীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ঢাকার শিল্পী আবিদা রহমান সেতু। এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করবেন সাতক্ষীরার শিল্পী রোজ বাবু, পাবনার প্রলয় চাকী, সিলেটের গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকার ফকির শাহাবুদ্দীন, সুরাইয়া পারভীন ও নবনীতা জাঈদ চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের সুজিত চক্রবর্তী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র। নেত্রকোনার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত গান পরিবেশন করবে চাঁদপুরের দল সপ্তসুর, মুকুন্দ দাসের গান পরিবেশন করবে মুন্সিগঞ্জের দল অন্বেষণ, মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল স্বভূমি লেখক-শিল্পী কেন্দ্র, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেশের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাষায় গণমানুষের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের স্বরলিপি সাংস্কৃতিক ফোরাম এবং অশোক সেনগুপ্তের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী। একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ময়মনসিংহের শিল্পী দিল বাহার খান, মুন্সিগঞ্জের শিশির রহমান, ঢাকার অলক দাশগুপ্ত, চট্টগ্রামের কল্পনা লালা, জয়ন্তী লালা ও শ্রেয়সী রায়। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের প্রাপন একাডেমি।
উৎসব কমিটির আহব্বায়ক আবু ফারাহ পলাশের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয়ক পরিষদের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান ও যুগ্ম আহব্বায়ক ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন শিল্পী আরিফ রহমান, উৎসব উদ্যাপন কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক শিল্পী শ্রেয়সী রায়, পরিষদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অলক দাশগুপ্ত ও হাবিবুল আলম।